মুক্তিযোদ্ধা সংসদে অনিয়ম: ব্যবস্থা নিতে দুদকে স্মারকলিপি

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) স্মারকলিপি দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল এফ এফ ফাউন্ডেশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 April 2018, 08:10 AM
Updated : 22 April 2018, 10:01 AM

রোববার সকালে মানববন্ধন শেষে দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মুহাম্মদ মুনীর চৌধুরীর কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল স্মারকলিপি দেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ১৯৭২-৭৩ সাল থেকে ২০০৬-০৭ সাল এবং ২০০৭-০৮ থেকে ২০১৪-১৫ সাল পর্যন্ত সময়ে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গচ্ছিত টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এরপর সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে ২০১৪ ও ২০১৬ সালে হাই কোর্টে পৃথক দুইটি রিট দায়ের করা হয়। পরে ২০১৭ সালে ৩১ মে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুদককে নির্দেশনা দিয়ে আদেশ দেয় হাই কোর্ট।

হাই কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির’ সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে খোদ দুদকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা করা কথা উল্লেখ করা হয় এ স্মারকলিপিতে।

জালাল উদ্দিন (বিচ্ছু জালাল), আব্দুল মতিন সেন্টু ও রুহুল আমিন মজুমদার এবং মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের নেতা বদরুন নাহার ভূইয়া এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ন্যাশনাল এফ এফ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এস এম জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে একটি মানববন্ধন হয়।

এতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদে ১৯৭২-৭৩ সাল থেকে ২০০৬-০৭ সালে দায়িত্বপ্রাপ্ত আব্দুল আহাদ চৌধুরী, রেদোয়ান আহমেদ, কবির হোসেন, শাহ আলম চৌধুরী গংদের এবং ২০০৭-০৮ সাল থেকে ২০১৪-১৫ সালে সংসদের চেয়ারম্যান হেলাল মোরশেদ খান ও মহাসচিব এমদাদ হোসেন মতিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুদকের কাছে দাবি জানানো হয়।

তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্বপ্রাপ্ত অভিযুক্তরা সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের ৮৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে আইনজীবী সদরুল হক সুধা অভিযোগ করেছেন।

মানববন্ধনে তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দুর্নীতি করেছে। এই দুর্নীতির মূল উপাদান ছিল গত সংসদ নির্বাচনের পর ক্ষমতা আরোহনের দিন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সারা দেশে আতশবাজি ফাটিয়ে তাদের অবস্থান জানান দিয়েছিল। এরপর সরকারের কাছ থেকে ১১ থেকে ১২ কোটি টাকা তারা নিয়ে আত্মসাত করেছেন। যেখানে একটি গাড়ি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চলছে পারে সেখানে তারা পাঁচ/সাতটি গাড়ির টাকা নিয়েছেন। এর আগেও কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে। তারা বিভিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।”

মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন (বিচ্ছু জালাল) বলেন, “স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর আমরা দেখতে পাচ্ছি স্বপ্নের বাংলাদেশে জঙ্গি, সন্ত্রাস, মাদক এবং দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে। আমরা সত্যকে সামনে তুলে ধরতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম।

“হাই কোর্ট দুদককে নির্দেশ দিয়েছে সেই মামলা গ্রহণ করার জন্য। অত্যন্ত পরিতাপ ও দুঃখের বিষয় দুদকের চেয়ারম্যান সাহেব আপনি এখনও মামলা গ্রহণ করেননি। অনতিবিলম্বে মামলা গ্রহণ করুন।”