গভীর রাতে হল থেকে ছাত্রীদের বের করে দেওয়া কলঙ্কজনক: বিএনপি

রাতের অন্ধকারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে কয়েকজন ছাত্রীকে বের করে দিয়ে হল প্রশাসন ‘ন্যক্কারজনক ও কলঙ্কজনক’ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে সমালোচনা করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2018, 12:55 PM
Updated : 20 April 2018, 12:55 PM

শুক্রবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই প্রতিক্রিয়া জানান।

তিনি বলেন, “গতকাল লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী কমনওয়েলথ সম্মেলনে এক্সিকিউটিভ সেশনে যখন বক্তব্য রাখছিলেন তখন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদেরকে গভীর রাতে হল থেকে সম্পূর্ণ অমানবিক আচরণের মাধ্যমে বের করে দেওয়া হয়। তাদের অপরাধ তারা ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছিল।

“বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই ঘটনা ইতিহাসের একটি অন্যতম ন্যক্কারজনক ও কলঙ্কজনক ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দ্বারা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত কোমলমতি ছাত্রীদের বেছে বেছে হল থেকে বের করে দেওয়া- এটা পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে কী সম্ভব?”

বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে ১ টার মধ্যে কবি সুফিয়া কামাল হলের তিন ছাত্রীকে তাদের স্থানীয় অভিভাবকের কাছে তুলে দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, যারা সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, তাদের ডেকে ডেকে ‘তদন্তের নামে হয়রানি’ করছে হল কর্তৃপক্ষ। 

সন্ধ্যার পর থেকে হল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং ফোন কেড়ে নিয়ে ফেইসবুকে কে কোন পোস্ট দিয়েছে তা পরীক্ষা করে দেখে বলে হলের ছাত্রীদের ভাষ্য। এরই এক পর্যায়ে মধ্যরাতে তিন ছাত্রীর অভিভাবকের ডাক পড়ে হলে। এর পর গভীর রাতে তাদের বের করে দেওয়া হয়।

রিজভী বলেন, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্তব্য ছাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়া। সেখানে সরকারে ‘পা চাটা’ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আওয়ামী চেতনার শিক্ষকরা কী ভয়ংকর অমানুষ হতে পারেন! যে তারা এই ছাত্রীদেরকে হল থেকে রাতে বের করে দিচ্ছেন।

“ছাত্রলীগের অপকর্মের মদদদাতা আওয়ামী সমর্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে এতো নিচে নামতে পারে, সেটা দেখে বিবেকবান মানুষরা আজ বিস্মিত  ও হতভম্ব। আওয়ামী ক্ষমতার বলয়ে ঢুকে এরা শিক্ষার মূল আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়েছেন।”

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির মারধরের ভিডিও ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়ার প্রসঙ্গ টানেন রিজভী।

তিনি বলেন, “কত বড় নৃশংস ও অমানবিক হতে পারে ছাত্রলীগের এই ছেলেটি। এর আগেও সে অবৈধ অস্ত্রসহ ধরা পড়ে কিন্তু থেকে যায় ধরাছোয়ার  বাইরে। দেখা যাবে সেও ছাত্রলীগের নেত্রী এশার মতো তিরস্কারের পরিবর্তে পুরস্কৃত হবে একদিন।

“অবৈধ ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত অবৈধ টাকা অর্জনে লিপ্ত হতে গিয়ে চর্চিত হিংসার বাড়-বাড়ন্ত ক্রমবর্ধমান মাত্রায় সংঘটিত হচ্ছে ছাত্র লীগের  দ্বারা। এটাই হলো শেখ হাসিনার আইনের শাসন, সুশাসন, উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের নমুনা।’’

সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা মাসুদ আহমেদ তালুকদার, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সেলিমুজ্জামান সেলিম ও রফিক শিকদার উপস্থিত ছিলেন।