বৃহস্পতিবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, বিভাগীয় কার্যালয় এবং প্রধান কার্যালয়ের মহাপরিচালক থেকে উপ-পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নিয়ে এক পর্যালোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, “এখন থেকে দুদকের গোয়েন্দা শাখা কেবল দুর্নীতিবাজদের পিছনেই গোয়েন্দাগিরি করবে না, কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করবে। তথ্যপ্রযুক্তিসহ সকল গোয়েন্দা টুলস ব্যবহার করে ঘরে-বাইরে সকল প্রকার দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।”
সভায় দুদক চেয়ারম্যান জানান, প্রতারক চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন স্থানে কমিশনের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করছে বলে তারা তথ্য পেয়েছেন।
এ ধরনের প্রতাকদের বিরুদ্ধে ‘যথাযথ ব্যবস্থা’ নিতে কমিশনের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়ে ইকবাল মাহমুদ বলেন, “তারা কমিশনের ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা করছে। তাই এ বিষয়ে তৃণমূল পর্যায়েও সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।”
কমিশনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে চেয়ারম্যান বলেন, “এ প্রতিষ্ঠান আমাদের সকলের। এটি হৃদয়ে ধারণ করতে হবে এবং কর্মসম্পাদনেও এর প্রতিফলন থাকতে হবে। তবেই এ প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হতে পারে।”
দুর্নীতি মামলার অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজ গুরুত্ব দিয়ে করার আহ্বান জানিয়ে কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, “প্রতিটি অনুসন্ধান বা তদন্তের গুণগত মান এমন হতে হবে যাতে প্রতিটি মামলায় প্রকৃত অপরাধীদের শতভাগ সাজা নিশ্চিত করা যায়।”
সভায় দুদকের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপস্থাপিত প্রতিবেদনে মামলা, আসামি গ্রেপ্তার, আদালতে আত্মসমর্পণ ও পলাতক আসামিদের পরিসংখ্যান দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন চেয়ারম্যান।
ওই বিভাগের কর্মকর্তাকে তিনি বলেন, “আপনার বিভাগে দুদকের মামলার অনেক আসামি আইন-আদালতে আত্মসমর্পণ না করে, আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কীভাবে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে? আপনাদের দায়িত্ব কী? যে কোনো বিষয়ে কমিশন সর্বোচ্চ দ্রুততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে তা বাস্তবায়নে এত বিলম্ব কেন?”
কমিশনের পর্যবেক্ষণের সুবিধার জন্য মামলা হওয়ার পরপরই এজাহারের অনুলিপি কমিশনের আইন অনুবিভাগে পাঠাতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন ইকবাল মাহমুদ।
কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, এখন থেকে প্রতিটি অনুসন্ধান বা তদন্ত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। প্রতিটি অনুসন্ধান বা তদন্তে আসামির ফৌজদারি অপরাধ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নিরুপণ করতে হবে।”
সেই সঙ্গে কাউকে ‘অহেতুক হয়রানি’ করার জন্য দুদকের মামলায় আসামি করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
মামলার সাক্ষী বা আসামিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার না করা এবং নির্ধারিত সময়ে অফিসে উপস্থিত হতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দেন দুদক চেয়ারম্যান।
দুদকের দুই কমিশনার নাসিরউদ্দীন আহমেদ ও এএফএম আমিনুল ইসলাম, সচিব মো. শামসুল আরেফিন, মহাপরিচালক (আইন) মো. মঈদুল ইসলাম, মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী, মহাপরিচালক (তদন্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মহাপরিচালক (মানিলন্ডারিং) মো. আতিকুর রহমান খান, মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) মো. জয়নুল বারীসহ দুদকের বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক সভায় উপস্থিত ছিলেন।