সৌদি আরব থেকে তিনি যাবেন যুক্তরাজ্যে, কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে।
আট দিনের এই সফর শেষে আগামী ২৩ এপ্রিল তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী রোববার বিকাল পৌনে ৫টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের দাম্মামের উদ্দেশে রওনা হন। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে দাম্মামের কিং ফাহাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি।
সোমবার ২৩ দেশের যৌথ সামরিক মহড়া ‘গাল্ফ শিল্ড-ওয়ান’ এর কুচকাওয়াজ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।
সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা এই অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন।
সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে গত ১৮ মার্চ শুরু হওয়া গাল্ফ শিল্ড-ওয়ানে বাংলাদেশও অংশ নিচ্ছে।
বাংলাদেশ এর আগে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটে অংশ নিয়ে এবার সামরিক মহড়ায় যোগ দিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আবহমান ধর্মীয়, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের পাশাপাশি সামরিক ক্ষেত্রেও সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সম্প্রসারিত হচ্ছে।”
গাল্ফ শিল্ড-ওয়ানের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের বৈঠকে (সিএইচওজিএম) যোগ দিতে সোমবার বিকেলেই দাম্মাম থেকে লন্ডনের পথে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র আমন্ত্রণে ১৭ থেকে ২১ এপ্রিল ২৫তম কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন শেখ হাসিনা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই সফরে তার সঙ্গে থাকছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রাক কমনওয়েলথ সম্মেলন সভায় বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা প্রশ্নে বাংলাদেশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে।
“কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে (রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন) বর্তমান চিত্রটি অন্য সদস্যগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানদের সামনে তুলে ধরবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।”
শেখ হাসিনা ১৭ এপ্রিল সকালে ওয়েস্ট মিনস্টারে কমনওয়েলথ নারী ফোরামের ‘এডুকেট টু এম্পাওয়ার: মেইকিং ইকুইটেবল অ্যান্ড কোয়ালিটি প্রাইমারি এডুকেশন অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন এ রিয়েলিটি ফর গার্লস অ্যাক্রস দ্য কমনওয়েলথ’ শীর্ষক অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন।
বিকালে যুক্তরাজ্যের গবেষণা সংস্থা ওডিআই আয়োজিত ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি: নীতি, অগ্রগতি ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা থাকবেন প্রধান বক্তা।
সেদিন বিকালে তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান ও নৈশভোজে যোগ দেবেন। ১৯ এপ্রিল কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের বৈঠকের উদ্বোধনী ও অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
এছাড়া কমনওয়েলথ মহাসচিবের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠান এবং রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের দেওয়া নৈশভোজেও প্রধানমন্ত্রীর অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
২০ এপ্রিল সম্মেলনের সমাপনী কার্যনির্বাহী অধিবেশনে অংশ নেওয়ার পরদিন তিনি রয়েল কমনওয়েলথ সোসাইটি (আরসিএস) আয়োজিত সংবর্ধনা এবং রানির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও তিনি অংশ নেবেন।
শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর।