ধর্ষণকারীদের ‘ক্রসফায়ারে’ চান জাপা এমপি  

বিচার বহির্ভূত হত্যার পক্ষে অবস্থান নিয়ে সংসদে বক্তব্য দিলেন প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির আইন প্রণেতা কাজী ফিরোজ রশীদ।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2018, 03:08 PM
Updated : 10 April 2018, 03:08 PM

মঙ্গলবার সংসদ অধিবেশনে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি দেশে সম্প্রতি ‘গণধর্ষণ বেড়ে যাওয়ার’ বিষয়টি তুলে ধরে তার এই মত প্রকাশ করেন।

গত মার্চ মাসে আশুলিয়ায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে ধর্ষণের আসামি নিহত হওয়ায় বিষয়টি তুলে ফিরোজ রশীদ বলেন, “নয় বছরের একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে পালিয়ে গিয়েছিল- সেই ধর্ষণকারীর সাথে র‌্যাবের বন্দুক যুদ্ধ হয়েছে।

“র‌্যাবের দুইজন আহত হয়েছে। ধর্ষক নিহত হয়েছে। এটাই জনগণ দেখতে চায়।”

“প্রতিদিনই বাসে ধর্ষণ হবে আর আইনের আশ্রয় নেবেন? এইভাবে চলতে পারে না। মানুষ দেখতে চায়- এই মুহূর্তে বিচার হবে কি, হবে না।”

সম্প্রতি ধামরাইয়ে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের অভিযোগে যে পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছেন, আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের বিচার হবে না বলে মনে করেন সাবেক মন্ত্রী ফিরোজ রশীদ।

“গ্রেপ্তার হয়েছে ঠিকই, কিন্তু বিচার হবে না।”

টাঙ্গাইলে বাসে ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডের শিকার জাকিয়া সুলতানা রূপার ঘটনায় বিচারে আসামিদের ফাঁসির রায় হলেও দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া পেরিয়ে সেই রায় কার্যকর হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান তিনি।

কাজী ফিরোজ রশিদ

“নিম্ন আদালতে ফাঁসি হয়েছে। উচ্চ আদালতে তারা আইনের আশ্রয় নেবে। সেখানে ল পয়েন্টে আলোচনা হবে।

তারপর সর্বোচ্চ আদালত আছে। তারপর মহামান্য রাষ্ট্রপতি আছে। কবে ফাঁসি হবে? কোন জেলে কোন শেষ রাতে ফাঁসি হবে? তার খবর কেউ রাখবে না।

“এইভাবে সেদিন রূপা হত্যা মামলার একটা জলন্ত নিদর্শন আমরা দিতে পারতাম। তাহলে এইভাবে আরেকটি মেয়েকে পৈশাচিক ধর্ষণের শিকার হতে হয় না।”

“রশু খাঁ যার নেশা ছিল, ধর্ষণ করে হত্যা করা। দুই-তিনটি মামলায় তার ফাঁসির আদেশ হয়েছে। এই ফাঁসিতে কিন্তু গণধর্ষণ থামানো যাবে না। মানুষ চায় তাৎক্ষণিক একটা বিচার।”

নারীদের অবাধ চলাচল নিরাপদ করতে রাষ্ট্রের উদ্যোগী ভূমিকা চেয়েছেন এই আইন প্রণেতা।

এক্ষেত্রে জঙ্গি দমনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “জঙ্গি দমন করছেন কীভাবে? শিশু জঙ্গি, নারী জঙ্গি, কিশোর জঙ্গি, বয়স্ক জঙ্গি-সমস্ত জঙ্গি বন্দুকযুদ্ধে দমন করা হয়েছে। আইনের আশ্রয়ে কি জঙ্গি আনছেন?

“মিরপুরে যে ১০ জনকে গুলি করে মারা হয়েছে, তাদের আইনের আশ্রয় আনতে পারতেন? তাদের গ্রেপ্তার করে বিচার করতে পারতেন? বন্দুকযুদ্ধ যদি না হত, তাহলে জঙ্গি দমন করা যেত না।”

ধর্ষণ মামলার সংক্ষিপ্ত বিচারে আইন সংশোধনের সুপারিশ জানিয়ে  ফিরোজ রশীদ বলেন, “এক মাসের মধ্যে সামারি ট্র্যায়াল করে বিচার করুন। না হয় তিন মাস দেন। ১২ বছর বসে কেন এদের বিচার করবেন।

“আইন আনুন, আমরা সংসদ থেকে পাস করে দিব। না হলে এই নারীদের সম্ভ্রম বাঁচানো যাবে না।”

“আইনমন্ত্রী আছেন, আপনি আগামী সংসদে আইন নিয়ে আসেন। সামারি ট্রায়াল করেন। আমাদের সময় (জাতীয় পার্টির আমলে) এসিড নিক্ষেপ ছিল। আমরা তিন মাসে চারজনকে ফাঁসি দিলাম। সব বন্ধ হয়ে গেল। আপনারা পারবেন না। কারণ অতি গণতান্ত্রিক হয়ে গেছেন তো এজন্য সম্ভব নয়।”