কোটা পুনঃনিরীক্ষা বাজেটের পর: অর্থমন্ত্রী

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষণের বিদ্যমান ব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষে মত দিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন,  আগামী বাজেটের পর এ বিষয়টি পুনঃনিরীক্ষা করা হবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2018, 02:01 PM
Updated : 10 April 2018, 02:01 PM

সারা দেশে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলনের মুখে সরকার ৭ মের মধ্যে কোটা ব্যবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত জানানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরদিন অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্য এল।  

মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন,  “কোটা থাকতেই হবে, তবে কত পার্সেন্ট থাকবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। কোটা থাকার কারণটা বলি, যারা পশ্চাদপ দ, হ্যাভ টু বি লিফটেড, বাংলাদেশে এটা নিয়ে সারা জীবন যুদ্ধ করেছে যে আমরা ব্যাকওয়ার্ডে ছিলাম সুযোগ সুবিধা পাই নাই।

তবে এখন কোটায় নিয়োগের যে হার, তা ‘বেশি হয়ে গেছে’ মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “টু মাচ, এটা সংস্কার করা উচিত। আমাদের মন্ত্রী বলেছেন, এটা সংস্কারের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। বাট কোটা মাস্ট বি দেয়ার ফর ডিজঅ্যাডভান্সড পিপল।”

বর্তমানে দেশে পাঁচ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য। প্রতিবন্ধী এক শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ও জেলা কোটা ১০ শতাংশ করে। সব মিলিয়ে কোটার জন্য বরাদ্দ ৫৬ শতাংশ। ফলে এর কোনো শ্রেণিতে যারা পড়েন না, তাদের প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে বাকি ৪৪ শতাংশের জন্য।

এই পদ্ধতি সংস্কারের পাঁচ দফা দাবিতে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ এর ব্যানারে আন্দোলন চালিয়ে আসছে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রোববার রাতভর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের পর সোমবার সচিবালয়ে সমঝোতা বৈঠকে ৭ মের মধ্যে কোটা ব্যবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত জানানোর প্রতিশ্রুতি দেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ওই বৈঠকে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিলেও আরেকটি অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে।  মঙ্গলবার তারা সারাদিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ দেখায়।  বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সংহতি জানিয়ে রাস্তায় নামে।

দুপুরে সচিবালয়ে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) নগদ লভ্যাংশ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী মুহিত কোটা সংস্কারের পক্ষে মত দিয়ে বলেন, “এমন করা উচিত না,  যাতে অন্যরা কিছুই পায় না। এখন যেটা আছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, সেখানে  আমাদের ক্যানডিটেট পাওয়া যায় না। এই কোটা পূরণ না হলে মেধা কোটা থেকে নেওয়া হচ্ছে।”

বর্তমান কোটার হারের  সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ইটস ভেরি ব্যাড। ইট হ্যাজ টু বি রিএকজামিনড, আমিও সেই উপদেশ প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েছি, এটার রিএকজামিন করব আমরা।  অ্যাট লিস্ট আমার মন্ত্রণালয়ে এটা রি-একজামিন করব বাজেটের পরে।”

ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মজিব উদ্দিন আহমদ এবং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ছানাউল হক এ অনুষ্ঠানে ৫১ কোটি ২৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকার ডিভিডেন্ট ওয়ারেন্ট অর্থমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।