হাত হারানো রাজীবের চিকিৎসা ব্যয় দিতে হবে বাস মালিকদের

রাজধানীতে দুই বাসের রেষারেষিতে হাত হারানো তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব হোসেনের চিকিৎসা ব্যয় বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনকে বহন করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 April 2018, 07:30 AM
Updated : 4 April 2018, 07:53 AM

সেই সঙ্গে রাজীব হোসেনকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছে হাই কোর্ট।

যাত্রীদের চলাচলে বিদ্যমান আইন কঠোরভাবে কার্যকরের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনে আইন সংশোধন ও নতুন করে বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ডিএমপি কমিশনারসহ আট বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। 

এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার রুলসহ এ আদেশ দেয়।

মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব যাত্রাবাড়ীর একটি মেসে থাকেন। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি বাসে করে কলেজে যাওয়ার সময় ওই ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আনোয়ার কবীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বেলা দেড়টার দিকে বাংলামোটর দিক থেকে ফার্মগেটমুখী একটি দোতলা বিআরটিসি বাস সার্ক ফোয়ারার কাছে পান্থকুঞ্জের পাশে সিগনালে থেমে ছিল। একই দিক থেকে আসা স্বজন পরিবহনের বাসটি বেপরোয়া গতিতে এসে দোতলা বাসের পাশের ফাঁক দিয়ে ঢুকে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করে।

এসময় দুই বাসের মাঝে পড়ে রাজীবের ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দুই বাসের চাপায় ঝুলতে থাকা ওই হাতের ছবি বুধবার সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়।

এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বুধবার হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন। আদালতে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।

রুহুল কুদ্দুস কাজল পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালত বলেছে, রাজীবের হাত রিপ্লেস করার সুযোগ থাকলে তার ব্যয়ভারও দুই বাস কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে।”

মঙ্গলবার ওই ঘটনার পর পথচারীরা রাজীবকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাজীবের ডানহাত কুনইয়ের উপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তবে তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল।

শাহবাগ থানার উপ পরিদর্শক আফতাব আলী জানান, ঘটনার পরপরই স্বজন পরিবহনের চালক বাস রেখে পালিয়ে যায়। দোতালা বাসের চালক ওয়াহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রাজীবের বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তিন ভাইয়ের তিনি সবার বড়। পড়ালেখার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার টাইপ করে তিনি নিজের এবং ছোট দুই ভাইয়ের খরচ চালাতেন বলে রাজীবের মামা জাহিদুল জানিয়েছেন।