সেলিম ওসমান ‘অসুস্থ’, চতুর্থ দফায় পেছাল অভিযোগ গঠন

নারায়ণগঞ্জের সাংসদ এ কে এম সেলিম ওসমান ‘অসুস্থ থাকায়’ চতুর্থ দফায় পিছিয়েছে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2018, 01:52 PM
Updated : 27 March 2018, 01:59 PM

ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম জেসমিন আরা বেগম আগামী ২৮ জুন আবরও অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন রেখেছেন।

এ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মঙ্গলবার শুনানির ধার্য দিনে সেলিম ওসমান ‘অসুস্থ থাকায়’ আদালতে আসতে পারেননি জানিয়ে সময় প্রার্থনা করেন তার আইনজীবী সিদ্দিকুর রহমান ও মোজাম্মেল হক। এ সময় তারা সেলিম ওসমানের চিকিৎসা সনদপত্রও দাখিল করেন।

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ১৩ মে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে তারই স্কুলের প্রাঙ্গণে লাঞ্ছিত করা হয়। ওই ঘটনার ভিডিওতে প্রধান শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বসের নির্দেশ দিতে দেখা যায় স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে।

বিষয়টি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কিন্তু ওই ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হলে ‘লাঞ্ছনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি’ বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ।

পুলিশ প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে হাই কোর্ট এরপর পুরো ঘটনার বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেয়। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শেখ হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গত বছরের ১৯ জানুয়ারি হাই কোর্টে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে।

তিন দিন পর গত বছরের ২২ জানুয়ারি বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ জে বি এম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চ ওই তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে জিডিসহ বিচারিক নথিপত্র অবিলম্বে ঢাকায় পাঠাতে নির্দেশ দেয়।

হাই কোর্টের আদেশে বলা হয়, “আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে দেশের আইন নিরপেক্ষ ও বৈষম্য ছাড়া প্রয়োগ করা। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন, সবাই আইনের অধীন। এটি আইনের শাসনের মর্মবাণী। বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমরা ওই ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। বিচারের স্বার্থে এটি যথাযথ বলে প্রতীয়মান হয়।”

দোষীদের বিরুদ্ধে নালিশি মামলা করার জন্য জিডিসহ বিচারিক নথিপত্র গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিচারক জেসমিন আরার কাছে পৌঁছালে সেলিম ওসমান ও অপু নামের একজনকে তলব করেন বিচারক।

এরপর গত বছরের ৪ জুলাই এ মামলায় প্রথম অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন রাখা হয়। তারপর চার দফায় পেছাল অভিযোগ গঠন।