‘এমপিদের চ্যালা-চামুন্ডারা স্কুল-কলেজ চালানোয় প্রশ্ন ফাঁস’

সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের পছন্দমতো লোক থাকায় শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন একজন অধ্যাপক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2018, 06:57 PM
Updated : 23 March 2018, 06:57 PM

‘প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি করণীয়’ শিরোনামে এক আলোচনা সভায় ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রকৌশলী মো. সামসুল আলম শিক্ষা ব্যবস্থাকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে আলোচনায় তিনি বলেন, “এখন শিক্ষাদানের জন্য শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে।আর শিক্ষা যারা চালাচ্ছে তারা এটাকে আয়ের উৎস হিসেবে নিয়েছে। তাহলে শিক্ষার মান না বেড়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে- এটাই বাস্তবতা।”

শিক্ষা ক্ষেত্র চার দিক থেকে আক্রান্ত হচ্ছে অভিযোগ করে এই অধ্যাপক বলেন, “স্কুল কলেজের গভর্নিং বডিতে এমপিরা তাদের পছন্দ মত লোক দিচ্ছে। যারা কমিটিতে আছেন তাদের শিক্ষা নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই। এমপিদের চ্যালা-চামুন্ডারাই এখন স্কুল কলেজ চালাচ্ছে।

“আর এই সকল কারণে ক্লাসে পড়াশোনা হচ্ছে না, ফাঁস হচ্ছে প্রশ্নপত্র। প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে হলে আগে শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটা সিস্টেমে আনতে হবে।”

আলোচনা সভায় দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মনিরুজ্জামান বলেন, “শিক্ষা ব্যবস্থা জরুরি অবস্থার মধ্যে আছে বললে ভুল হবে। আমরা সব ক্ষেত্রেই এখন জরুরি অবস্থার মধ্যে আছি। এখন স্কুলের পাঠ্যবইয়ে সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে আসা হয়েছে, যা আগে ছিল না।

“রাজনৈতিক, মন্ত্রণালয়কেন্দ্রিক ও পদ্ধতিগতভাবে আজকে শিক্ষা আক্রান্ত। আরেক দিকে সরকারের শিক্ষা বিভাগ যে সব আমলারা চালাচ্ছেন তাদেরও এখন শিক্ষা নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই, শিক্ষা নিয়ে তাদের কোনো মাথা-ব্যথাও নেই। তারা আছেন নিজেদের নিয়ে। শিক্ষা নিয়ে এ রকম মতলববাজ শিক্ষা পদ্ধতি পৃথিবীর আর কোথাও নেই।”

শিক্ষায় সমস্যার তিনিও এমপিদের দায়ী করেন: “এই এমপিরা আগে খেয়েছে স্থানীয় সরকারকে, এখন খাচ্ছে শিক্ষাকে।”

প্রশ্নপত্র ফাঁসের জন্য কোচিং সেন্টারকে দায়ী করেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আ. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন।

তিনি বলেন, “স্কুল কলেজে এখন ভালো শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে না। ছেলে-মেয়েদের এখন মূল লক্ষ জিপিএ ৫ পাওয়া। এর জন্য বাচ্চারা কোচিং সেন্টারে যাচ্ছে। আর এই কোচিং সেন্টারই প্রশ্ন ফাঁসের জন্য মূল ইন্ধন দিচ্ছে। আমরা কি পারি না এই কোচিং সেন্টার ব্যবস্থাটাকে বন্ধ করতে?”

অধ্যাপক শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে সাপ্তাহিক শিক্ষা বার্তার সম্পাদক এ এন রাশেদা ও অধ্যাপক নুসরাত সুলতানা বক্তব্য রাখেন।