রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে গত ছয় দিন ধরে চিকিৎসাধীন আফসানাকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
দুর্ঘটনায় স্বামীর মৃত্যুর খবরে আফসানার ‘স্ট্রোক’ হলে গত রোববার শেরেবাংলা নগরের ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল আফসানাকে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে।
হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক বদরুল আলম বলেন, “আমরা সম্ভব সব চেষ্টাই করেছি। কিন্তু আজ সকালে উনার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। এরপর আর কিছু করার ছিল না।”
ওই দুর্ঘটনায় নিহত ২৩ জনের মরদেহ রোববার দেশে ফিরিয়ে এনে আর্মি স্টেডিয়ামে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আবিদ-আফসানার একমাত্র ছেলে তানজিব বিন সুলতান মাহি সেদিন হাসপাতালে মাকে রেখে বাবার লাশ নিতে বনানীতে যায়।
বাবার মৃত্যুর ১১ দিন পর মাকে হারিয়ে উত্তরার মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের ছাত্র মাহি যেন একেবারেই স্তব্ধ হয়ে গেছে।
আফসানার চাচা ইয়াদ আলী বলেন, “ভোরেই আমরা জানতে পারি ওর অবস্থা খারাপের দিকে। আমরা আসতে আসতে ওর অর্গানগুলো অকার্যকর হতে থাকে। পরে সাড়ে ৯টায় মারা যায়।”
শুক্রবার আসরের পর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরে পার্কের পাশে আবিদদের বাসার কাছের মসজিদে আফসানার জানাজা হয়। পরে বনানীর সেনা কবরস্থানে স্বামীর পাশেই তাকে দাফন করা হয়।
পাঁচ হাজার ঘণ্টা ফ্লাইট চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল আবিদের। নেপালের বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত ড্যাশ ৮-কিউ ৪০০ এয়ারক্রাফটটি ক্যাপ্টেন তিনিই কানাডা থেকে বাংলাদেশে উড়িয়ে এনেছিলেন।
আর আফসানাদের গ্রামের বাড়ি নাটোরে। তার বাবা এ কাশেম শেখ একজন চিকিৎসক। ছেলেকে নিয়ে তারা থাকতেন উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৮ নম্বর সড়কের ৩৮ নম্বর বাসায়।
কাঠামন্ডুর ত্রিভুবনে দুর্ঘটনার দিন ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ক্যাপ্টেন আবিদ আহত অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। কিন্তু পরদিন সকালে তারা আবিদের মৃত্যুর খবর দিলে ভেঙে পড়েন আফসানা।
আবিদের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুর্ঘটনার খবর শুনে বার বার ভাবি সংজ্ঞা হারাচ্ছিলেন। মারা যাওয়ার খবর পেয়ে একেবারেই ভেঙে পড়েন। আসলে এত বড় শোক সহ্য করতে পারেননি।”