বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন, বিজয় একাত্তরসহ কয়েকটি হলের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী টিএসসি ও এর আশপাশের এলাকায় বিক্ষোভ করে। এ সময় কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই তিন শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে আনার পর রাত ১২টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে সহকারী প্রক্টর সোহেল রানা ঘটনা সম্পর্কে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাস্তায় সাইড দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ থেকে মটরসাইকেল আরোহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী রাত সাড়ে ১০টার দিকে কলাভবনের সামনের রাস্তায় একটি মাইক্রোবাস আটকায়।
তিনি বলেন, তারা চালককে বেরিয়ে আসতে বলেন। চালক তাতে সাড়া না দেওয়ায় কথা কাটাকাটির মধ্যে মাইক্রোবাসের একটি ‘লুকিং গ্লাস’ ভেঙে দেন শিক্ষার্থীরা।
তিন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসাইন এবং বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক তানভীর হোসেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিজয় একাত্তর হলের বাবু নামের এক ছাত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “র্যাব সদস্যরা ওই তিন শিক্ষার্থীকে বেদম মারধর করে তাদের মাথায় বন্দুক ঠেকায়। আমরা কয়েকজন ওদিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে বন্দুক উঁচিয়ে বারণ করে।”
শিক্ষার্থীদের র্যাব ধরে নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশের একটিসহ অন্তত তিনটি গাড়ি তারা ভাংচুর করে বলে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান।
তবে ঘটনা সম্পর্কে ভিন্ন বক্তব্য এসেছে র্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খানের কাছ থেকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কাঁটাবন এলাকায়।
“রাতে ওই এলাকায় মটরসাইকেল আরোহী দুই-তিনজন তরুণ যানজটে পড়ে। সেখানে রাস্তার পাশে র্যাবের একটি মাইক্রোবাস ও একটি স্টিকারহীন প্রাইভেটকার দাঁড়িয়েছিল। যানজটের জন্য দোষারোপ করে তারা একটি গাড়ির গ্লাস ভেঙে দেয়।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে মুফতি মাহমুদ বলেন, ওই শিক্ষার্থীদের আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।
“তারা ওই গ্লাস মেরামত করে দিতে চেয়েছে। সে বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।”
পরে র্যাব-১০ এর একটি গাড়িতে করে রাত পৌনে ১২টার দিকে ওই শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে পৌঁছে দেওয়া হয় বলে সহকারী প্রক্টর সোহেল রানা জানান।
এ সময় র্যাব সদস্যরা মটরসাইকেলের চাবিও তার হাতে বুঝিয়ে দেন বলে জানান তিনি।
সহকারী প্রক্টর বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতর থেকে শিক্ষার্থীদের কেন ধরে নেওয়া হল সে বিষয়ে র্যাবের কাছে ব্যাখ্যা চাইবেন তারা।
“ছাত্ররা কোনো অপরাধ করলে তারা আমাদের জানাতে পারত। ক্যাম্পাসের মধ্য থেকে ধরে নিয়ে গেল কেন, সে বিষয়ে রোববার তাদের ডাকা হবে। ছাত্রদেরও ওই দিন ডেকে বিষয়টির মীমাংসা করা হবে।”