ইউএস-বাংলার যে উড়োজাহাজটি গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়, মেহেদী ছিলেন সেই ফ্লাইটের যাত্রী।
সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা, ফুপাতো ভাই ফারুক হোসেন প্রিয়ক, প্রিয়কের স্ত্রী আলমুন নাহার অ্যানি এবং তাদের শিশু সন্তান প্রিয়ন্ময়ী তামারা।
ওই দুর্ঘটনায় মেহেদী, স্বর্ণা আর অ্যানি প্রাণে বেঁচে গেলেও প্রিয়ক আর তামারা সোমবার দেশে ফিরেছে লাশ হয়ে।
নিহত ২৬ জন বাংলাদেশির মধ্যে যে ২৩ জনের মরদেহ শনাক্ত করা গেছে, তাদের দেশে নিয়ে এসে আর্মি স্টেডিয়ামে জানাজার পর হস্তান্তর করা হয়েছে পরিবারের কাছে।
ওই দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া দশজনের মধ্যে মেহেদী, স্বর্ণা ও অ্যানিকে গত শুক্রবার ঢাকায় এনে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।
হাসপাতাল থেকেই হাতে ক্যানোলা লাগানো এবং ঘাড়ে সার্জিক্যাল কলার পরা মেহেদী তার ‘ভাই আর বাবুটাকে’ বিদায় জানাতে সোমবার বিকালে আর্মি স্টেডিয়ামে আসেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিধস্ত হওয়ার পর উড়োজাহাজের সামনে ও পেছনের দুটি অংশ ভেঙে যায়। সামনের অংশ দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় চার-পাঁচজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন মেহেদী। এক থেকে দেড় মিনিটের মধ্যে পুরো উড়োজাহাজে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
“আমাদের সিট ছিল সামনের দিকে। সিট বেল্ট ছিঁড়ে বের হওয়া গেছে বলেই বেঁচে গেছি। ভেতরের দিকে সিটগুলো একটার সঙ্গে আরেকটা মিশে গেছিল। ওখানে যারা ছিলেন, বের হতে পারেননি, পুড়েই মারা গেছেন।”
মেহেদী বাবা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “ওর মধ্যে প্রচণ্ড ভয় কাজ করছে। বার বার সে দুর্ঘটনার স্মৃতিগুলো মনে করছে।”
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আর্মি স্টেডিয়ামে জানাজায় অংশ নেওয়ার পর মেহেদী আবার হাসপাতালে ফিরেছেন। তার চিকিৎসা এখনও শেষ হয়নি।