২৩ জনের মরদেহ আসছে সোমবার

কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে এ পর্যন্ত ২৩ বাংলাদেশিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে, যাদের মরদেহ দেশে এনে সোমবারই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2018, 03:33 PM
Updated : 18 March 2018, 03:33 PM

নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি অসিত বরণ সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শনিবার ১৭ জনের পর রোববার আরও ছয়জনকে শনাক্ত করা গেছে।   

“নিহত ২৬ জন বাংলাদেশির মধ্যে তিনজনকে এখনও শনাক্ত করা যায়নি। তাদেরও শনাক্তের সব ধরনের চেষ্টা চলছে।”

নেপালে থাকা বাংলাদেশ চিকিৎসক দলের সদস্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চিহ্ন দেখে বা অন্যভাবে ওই তিনজনকে শনাক্ত করা না গেলে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি জানান, শনাক্ত করা ২৩টি মরদেহ কফিনে রাখার প্রক্রিয়া চলছে। সোমবার বিশেষ ব্যবস্থায় কফিনগুলো দেশে পাঠানো হবে। বাংলাদেশি চিকিৎসক দলের সদস্যরাও একইসঙ্গে ফিরবেন।

এই ২৩ জনের মধ্যে পাইলট আবিদ সুলতান, কো-পাইলট পৃথুলা রশীদ এবং কেবিন ক্রু খাজা হোসেন মো. শফি ও শারমিন আক্তার নাবিলা রয়েছেন।

যাত্রীর মধ্যে ফয়সাল আহমেদ, বিলকিস আরা, বেগম হুরুন নাহার বিলকিস বানু, আখতারা বেগম, নাজিয়া আফরিন চৌধুরী, রকিবুল হাসান, হাসান ইমাম, আঁখি মনি, মিনহাজ বিন নাসির, ফারুক হোসেন প্রিয়ক, তার মেয়ে প্রিয়ন্ময়ী তামারা, মতিউর রহমান, এস এম মাহমুদুর রহমান, তাহিরা তানভিন শশী রেজা, বেগম উম্মে সালমা, মো. নুরুজ্জামান, রফিক জামান, তার স্ত্রী সানজিদা হক বিপাশা, তাদের ছেলে অনিরুদ্ধ জামানকে শনাক্ত করা হয়েছে।

 

ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস২১১ গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হলে ৭১ আরোহীর মধ্যে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি বলে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে এর আগে জানানো হয়েছে।

ইউএস বাংলার জনসংযোগ শাখার ব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নেপালি কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে, আলিফুজ্জামান, পিয়াস রায় ও নজরুল ইসলামকে এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।”

শনাক্ত হওয়া বাংলাদেশিদের কফিন ঢাকায় আনা হবে বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ উড়োজাহাজে করে।

সোমবার বিকাল ৪টায় ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে কফিনগুলো নামবে বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক আলমগীর কবির রোববার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

মরদেহ হস্তান্তরের জন্য স্বজনদের ওই সময়ই উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

এর আগে রোববার সন্ধ্যায় আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম শাম্মী জানিয়েছিলেন, কফিন ঢাকার কুর্মিটোলায় বঙ্গবন্ধু বিমান ঘাঁটিতে নামবে।

নিহত আলোকচিত্রী ফারুক হোসেন প্রিয়কের বন্ধু ইজাজ আহমেদ মিলন তখন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “আগামীকাল বিকালে আমাদের কুর্মিটোলার বিমান ঘাঁটিতে থাকতে বলেছে। সেনাবাহিনী স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করবে। পরে জানাজার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।” 

ইউএস বাংলার কর্মকর্তা কামরুল জানান, নেপালে থাকা নিহতদের স্বজনদের আনতে ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইট সোমবার সকালে কাঠমান্ডু যাবে।

“আমাদের ফ্লাইটে করে স্বজনদের বিমানবন্দরে আনার পর তাদের আর্মি স্টেডিয়ামে আনা হবে। সেখানেই মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। জানাজা শেষে দাফনের প্রক্রিয়া নেওয়া হবে।”