দয়াগঞ্জে বধির কল্যাণ হাসপাতাল

রাজধানীর দয়াগঞ্জে শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় বধির কল্যাণ হাসপাতাল চালু হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2018, 02:09 PM
Updated : 18 March 2018, 02:16 PM

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন রোববার বিকেলে দয়াগঞ্জ মোড়ের কাছাকাছি ৬৩ নম্বর বাড়িতে এ হাসপাতালের উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ৭০ থেকে ৮০ লাখ লোক বধির। শব্দদূষণ এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা শিশুদের শ্রবণেন্দ্রীয়র ক্ষতি করছে।

পৃথিবীর বিভিন্ন শহরে শব্দের মাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া থাকলেও ঢাকায় তা না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেন মেনন।

তিনি বলেন, “শেষ পর্যন্ত হাই কোর্ট বাধ্য হয়েছে- এটা বন্ধের আদেশ দিতে। তারপরও আমরা সচেতন হই না, হতে চাই না।”

প্রতিবন্ধী মানুষদের প্রতি জনগণের মনোভাব পরিবর্তনে সচেতনতা তৈরির উপর গুরুত্ব আরোপ করে সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, “তারা হয়তো শুনতে পায় না, দেখতে পায় না; কিন্তু ছবি আঁকা, খেলাধুলাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে তারা যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে পারে।”

শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের জনশক্তিতে পরিণত করতে জাতীয় বধির সংস্থার অধীনে থাকা মাধ্যমিক স্কুলটিকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে বলে জানান মন্ত্রী।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সরকার ‘সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলার কাজ’ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রথম শর্তই হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন। আর সেজন্য সব শ্রেণির নাগরিককে জনশক্তিতে রূপান্তরে কাজ করতে হবে।”

তেজগাঁওয়ের জাতীয় নাক, কান, গলা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক জাহেদুল আলম বলেন, “বধিরতা আমাদের নীরব সংকট। একজন সন্তান যদি প্রতিবন্ধী হয়, তাহলে বাবা-মাকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আবার একজন লোক যদি বধির হয়ে যায়, সেটাও একটা সংকট- তার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাও অনেক কষ্টের।”

পল্লী সমাজসেবা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধীনে বেসরকারি এই জাতীয় বধিরকল্যাণ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেন ডা. মজিবুর রহমান মিয়াজী; তিনেই প্রকল্পটির পরিচালক।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের এই সহকারী অধ্যাপক বলেন, “প্রথমে চিকিৎসা, পরে শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের জন্য তৈরি- এই তিন ধাপে বধিরদের পুনর্বাসন করতে হয়। সে কারণে তাদের সমাজের মূল স্রোতে নিয়ে আসা অনেক চ্যালেঞ্জিং। সবার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের মাধ্যমে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।”

অন্যদের মধ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, সাবেক সচিব ফিরোজ কিবরিয়া, পুলিশের ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার তারেক আহমেদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।