শনিবার এ অনুষদের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের কোনো অনুষ্ঠান ছিল না। ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদ শাখা দোয়া, মিলাদ ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ কর্মসূচি নিলেও ‘অনুষদ চত্বর ব্যবহারের অনুমতি না পাওয়ায়’ সীমানাপ্রাচীরের বাইরে ফুটপাতে হয়েছে সেই আয়োজন।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আইন অনুষদ কর্তৃপক্ষ বলেছে, জায়গা বরাদ্দের জন্য লিখিত কোনো আবেদন তারা পাননি।
“আমরা সাধারণ ছাত্র ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যখনই উদ্যোগ নিই তখনই আমাদের অসহযোগিতা করা হয়। অথচ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনুষ্ঠানগুলো করা হয়, তার নেতৃত্বে থাকার কথা ছিলো আইন বিভাগের।”
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে তার নিজের আইন বিভাগ থেকে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল কি না জানতে চাইলে আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাঈমা হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “না, আজকে আমাদের ডিপার্টমেন্টে কিছু হয়নি। আজকে ছিল...ইউনিভার্সিটিতে প্রোগ্রাম ছিলো অনেকগুলো। আমি অসুস্থ বলে আর ওদিকে যাইনি।”
এরপর প্রশ্ন করতে গেলে তিনি আর কোনো কথা বলতে চাননি।
শরিফুলের দাবি, এবার বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে অনুষদ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অনুষদ চত্বরে অনুষ্ঠান করার অনুমতির জন্য ১১ মার্চ অনুষদের ডিনের কাছে গিয়ে তাকে কর্মূচিতে অতিথি থাকার আমন্ত্রণ জানানোর পাশপাশি চত্বরে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি চান। এজন্য ডিন তাকে পাঁচ হাজার টাকা ফির সঙ্গে লিখিত আবেদন ও একাডেমিক কমিটির অনুমোদনের বাধ্যবাধকতাসহ কয়েকটি প্রক্রিয়ার কথা জানান।
আইন অনুষদ ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, “কেবল স্থান বরাদ্দের জন্যই পাঁচ হাজার টাকা যোগাড় করাটা তাদের জন্য কষ্টকর। তাই বাইরের ফুটপাতে অনুষ্ঠান আয়োজন ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় ছিলো না।”
তবে অভিযোগটি উড়িয়ে দিয়ে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “না, কোনো দরখাস্ত আমার কাছে আসেনি।”
তাদের সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হয়েছে জানিয়ে ফের একই প্রশ্ন করা হলে আইনের এই অধ্যাপক বলেন, “না, আসেনি।”
এবিষয়ে শরিফুল বলেন, “আমি নিজে দাওয়াত দিতে গিয়েছি। ১১ তারিখ সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে স্যারের চেম্বারে গিয়েছি।”
এর আগে ৬ মার্চও ‘বঙ্গবন্ধু আইন বিভাগের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে সংগ্রহকৃত সকল তথ্য ও উপাত্তের অনুলিপি হস্তান্তর ও ১৩ দফা প্রস্তাবনা’ বাস্তবায়নের জন্য সংবাদ সম্মেলন করতে বিভাগের সামনের চত্বর ব্যবহারের অনুমতি চেয়েও পাননি বলে অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতাদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার যেসব সূর্যসন্তানদের নিয়ে গর্ব করে তার মধ্যে সবার ওপরে নাম রয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের নাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ১৯৪৯ সালে আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শেখ মুজিবকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সে সময় তাকে ১৫ রুপি জরিমানা ও মুচলেকা দিয়ে ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তাতে রাজী হননি এই আপোষহীন মহানায়ক। দীর্ঘ ৬১ বছর পর ২০১০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।