বাংলাদেশ আর পিছিয়ে নেই: প্রধানমন্ত্রী

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনে উৎফুল্ল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আর পিছিয়ে নেই।

সুমন মাহবুব গোপালগঞ্জ থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 March 2018, 07:37 AM
Updated : 17 March 2018, 09:56 AM
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় তার সমাধিতে আয়োজিত কর্মসূচিতে দেশের অগ্রযাত্রার সুখবরটি দিয়ে একথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে আমাদের জন্য একটা সুখের সংবাদ, জাতির পিতার জন্মদিনেই এই সংবাদটি পেলাম যে, আমাদের এত দিনের প্রচেষ্টার ফলে আজকের বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ ছিল, আজ সেই বাংলাদেশ আজ জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃতি পেয়েছে, উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে।

“জাতির পিতার যে স্বপ্ন, যে আকাঙ্ক্ষা; ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা, তার একধাপ অগ্রযাত্রা অর্জন করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। জাতির পিতার জন্মদিনে এই সুখবরটা বিরাট একটা অর্জন বলে আমি মনে করি। সেজন্য সকলকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।”

জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলোকে তিনটি শ্রেণিতে বিবেচনা করে; স্বল্পোন্নত, উন্নয়নশীল ও উন্নত। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় থাকলেও উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার যোগ্যতা অর্জন করল।

এই সংক্রান্ত চিঠি শুক্রবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশ মিশনে এক অনুষ্ঠানে সংস্থাটিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির হাতে তুলে দেন জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) সেক্রেটারিয়েটের প্রধান রোলান্ড মোলেরাস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অর্থাৎ আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো যেমন, ভারত, শ্রীলংকা, এমনকি পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ উন্নয়নশীল দেশ… আমরা একধাপ পিছিয়ে পড়েছিলাম। আজকে, আমরা খবর পেয়েছি; আমরা পিছিয়ে পড়ে নেই। এই অঞ্চলের সব দেশের সঙ্গে সমানতালে তাল মিলিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে পারব।”

বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে সকালে ধানমণ্ডিতে তার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে গোপালগঞ্জ রওনা হন শেখ হাসিনা।

টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দেওয়ার পর সেখানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত শিশু সমাবেশে ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা হাসিনা।

জাতির জনকের জন্মদিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের একটি শিশুও পথশিশু থাকবে না। প্রতিটি শিশু লেখাপড়া শিখবে মানুষের মতো মানুষ হবে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার উপযুক্ত হবে।

“এদেশেই প্রতিটি দরিদ্র মানুষ ঘর পাবে, খাদ্য পাবে, চিকিৎসা পাবে, সুন্দর জীবন পাবে। এদেশেই প্রতিটি মানুষ বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলবে।”

এস এম সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আরাফাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেয় স্থানীয় সোনাল স্বপ্না হাইস্কুলের ছাত্রী পৃয়ন্তী সাহা।
বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করার অনুরোধ করে পৃয়ন্তী।

অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিও বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার ছোট ভাইয়ের নামে ‘শেখ রাসেল’ ডাক টিকিট ও বিশেষ খাম অবমুক্ত করেন। এরপর তিনি ‘আমাদের ছোট্ট রাসেল সোনা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।

পরে তিনি দুজন দুস্থ মহিলার হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেন। সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কারও বিতরণ করেন।

শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও কাজী জাফর উল্যাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য এস এম কামাল হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব, তিন বাহিনী প্রধান, পুলিশের মহা পরিদর্শক, তথ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সচিব, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।