উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য প্রার্থনা

নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় হতাহতদের স্মরণে সারা দেশে সব ধর্মের উপাসনালয়ে হয়েছে বিশেষ প্রার্থনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2018, 08:41 AM
Updated : 16 March 2018, 08:41 AM

শুক্রবার সকালে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি।

বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনও সকালে মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে প্রার্থনার আয়োজন করে।

আর দুপুরে জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে হয় বিশেষ মোনাজাত।

রাজধানীর কেন্দ্রীয় গির্জা বলে পরিচিত কাকরাইলের সেইন্ট মেরিস ক্যাথেড্রালেও বিশেষ প্রার্থনা পরিচালিত হয়েছে এদিন।  

গত ১২ মার্চ নেপালের কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৬ জন বাংলাদেশি। 

উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সারা দেশে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়। আর শুক্রবার মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ে নেওয়া হয় বিশেষ প্রার্থনার কর্মসূচি।

সকালে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে জাতীয় পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির আয়োজিত বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথ, ঢাকা মহানগর  সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি ডি এন চ্যাটার্জি, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার রায়, প্রাক্তন সভাপতি স্বপন কুমার সাহাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

প্রার্থনা পরিচালনা করেন  ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পুরোহিত মিলন চক্রবর্তী। ধর্মগ্রন্থ গীতার বিভিন্ন শ্লোক পাঠ করে তিনি হতাহতদের জন্য বিশেষ প্রার্থনা করেন।

ডি এন চ্যাটার্জি বলেন, “নেপালে দুর্ঘটনায় যারা চলে গেলেন, তাদের পরিবারকে সমবেদনা জানানো বড় কঠিন ব্যাপার। যারা স্বজন হারিয়েছেন, কেবল তারাই জানবেন সে যন্ত্রণা। আমরা মা ঢাকেশ্বরীর কাছে প্রার্থনা করব, নিহতদের সকলের আত্মা যেন নির্বাণ লাভ করে। আহতরাও যেন দ্রুত সেরে উঠে।”

বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের উদ্যোগে মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বিশেষ প্রার্থনা শুরু হয় বেলা ১১টায়। প্রার্থনা পরিচালনা করেন বিহারের অধ্যক্ষ ধর্মমিত্র মহাথেরো।

বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের নির্বাহী সভাপতি নেত্রসেন বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক অশোক বড়ুয়া এসময় উপস্থিত ছিলেন।

অশোক বড়ুয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পনের মিনিটের বিশেষ প্রার্থনায় আমরা নিহতদের পারলৌকিক শান্তি কামনা করেছি। পাশাপাশি যারা আহত হয়ে চিকিৎসাধীন, তাদের আশু রোগমুক্তির প্রার্থনা করেছি।”

বাসাবোর ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারেও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিশেষ প্রার্থনা হয়েছে বলে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্তভূষণ বড়ুয়া জানিয়েছেন।

ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারে প্রার্থনা পরিচালনা করেন সংঘরাজ শুদ্ধানন্দ মহাথেরো। তিনি জানান,  বিহারের প্রার্থনা শুরু হয়েছিল সকাল ১০টায়। 

কাকরাইলের সেইন্ট মেরিস ক্যাথেড্রালে দিনভর প্রার্থনা হয়েছে বলে জানান চার্চের কাউন্সিলর সদস্য ফেবিয়ান এস গোমেজ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য সারা দিনই বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। সকালে আমরা হতাহতদের জন্য প্রার্থনা করেছি। প্রার্থনা পরিচালনা করেছেন ফাদার সনি রড্রিগ। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হবে শেষ প্রার্থনা।”

দুপুরে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জুমার নামাজের পর বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের স্মরণে বিশেষ মোনাজাত হয়। সেখানেও নিহতদের আত্মার শান্তি ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়।