দিনভর উত্তেজনার পর অবশ্য রাতে আটকদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
কোটা সংস্কারের দাবিতে ৫ দফা দাবিতে গত একমাস ধরেই আন্দোলন করে আসছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকাল ১১টায় শাহবাগ থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিতে একটি মিছিল নিয়ে সচিবালয় অভিমুখে রওনা দেয়।
মিছিলটি দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষাভবন চত্বরে পৌঁছালে পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়ের শিক্ষার্থী সুমন কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সচিবালয় অভিমুখে যাচ্ছিলাম। হাই কোর্ট মোড়ে পুলিশ আমাদের বাধা দেয়।
ওই তিনজনকে রমনা থানা থেকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে পরে প্রায় পঞ্চাশজনকে আটক করা হয় বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের ডিসি মারুফ হাসান সরদার জানিয়েছেন।
শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাস্তা আটকানো ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার জন্য তাদের আটক করা হয়েছে।
পরে অবশ্য রাত পোনে নয়টার দিকে সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে আন্দোলনকারীদের একজন মাজহারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
আটক অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারীর মুক্তির দাবিতে বিকাল পৌনে পাঁচটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি মিছিল রমনা থানা অভিমুখে রওনা দেয়। তবে থানার কাছাকাছি পুরাতন এলিফ্যান্ট রোডে পুলিশ তাদের থামিয়ে দেয়। এসময় আন্দোলনকারীদের সাথে ঘণ্টাখানেক পুলিশের বাগবিতন্ডা হয়।
পুলিশ আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে পাঁচজনকে থানায় এসে কথা বলতে বললে আন্দোলনকারীরা জানায়, থানায় যেতে হলে তারা সবাই যাবে, নয়ত ওইস্থানেই আটকদের মুক্তির ঘোষণা দিতে হবে।
এরপর পুলিশ আন্দোলনকারীদের শাহবাগের দিকে সরিয়ে দেয়। সেখানে আরেকদফা পুলিশের সঙ্গে তাদের বাগবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস থেকে নেমে কিছু শিক্ষার্থীকে আন্দোলনে যোগ দিতে দেখা যায়।
ওসির কক্ষ থেকে বেরিয়ে আন্দোলনকারীদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. শওকত বলেন, “পুলিশ বলছে আমাদের শাহবাগ থেকে সরে যেতে, তবে আটকদের ছেড়ে দেবে কিনা সে নিশ্চয়তা তারা দিচ্ছে না।”
তবে পুলিশের সঙ্গে থানায় চাকরিপ্রার্থীদের আলোচনা শেষে ডিসি মারুফ হাসান সরদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুপুরে হাই কোর্টের সামনে রাস্তা বন্ধ করে ওরা আন্দোলন করছিল। অনেকবার অনুরোধ করেছি আমরা রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য। ওরা যখন এরপরও রাস্তা ছাড়ছিল না তখন আমরা টিয়ারশেল নিক্ষেপ করি। উল্টো তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
রাত পৌনের ৮টার দিকেও আন্দোলনকারীরা শাহবাগে অবস্থান করে।
অবশেষে রাত পৌনে ৯টার দিকে আটকদের ছেড়ে দেওয়ার খবর পেয়ে শাহবাগ থেকে সরে যান আন্দোলনকারীরা।