৫ নগরীতে ভোট করতে সরকারের মত চায় ইসি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মে মাসে পাঁচটি সিটি করপোরেশনে ভোট করার বিষয়ে সরকারের কাছে ‘জরুরি’ ভিত্তিতে সর্বশেষ মতামত চেয়েছে নির্বাচন কমিশন।

মঈনুল হক চৌধুরী জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2018, 06:27 AM
Updated : 10 March 2018, 08:19 AM

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্মসচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত চিঠি ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে- গাজীপুর সিটি করপোরেশনসহ রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট করপোরেশনের সীমানা, ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ, নির্বাচন, আদালতের আদেশ প্রতিপালন ও প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সর্বশেষ অবস্থাসহ মতামত জানাতে হবে।

পাঁচ সিটি করপোরেশনের মধ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হবে ৪ সেপ্টেম্বর, সিলেটের ৮ অক্টোবর, খুলনার ২৫ সেপ্টেম্বর, রাজশাহীর ৫ অক্টোবর ও বরিশালের ২৩ অক্টোবর।

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুযায়ী, পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিন আগে যে কোনো সময় ভোট করতে হবে।

এ বছরের শেষে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিধান অনুযায়ী, তার আগেই এই পাঁচ নগরীতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে ইসিকে।

২০১৩ সালের ১৫ জুন একসঙ্গে চারটিতে এবং ৭ জুলাই গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়েছিল।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার ও সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আসন্ন বাজেটে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদও বৈঠকে ছিলেন।

বৈঠকের পর এবার সিটি ভোট একসঙ্গে হবে নাকি আলাদাভাবে করা হবে- জানতে চাইলে ইসি সচিব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “আমরা এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে কমিশন বৈঠক হলেই তাতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।”

গাজীপুর সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ৬ জুলাই। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। আইন অনুযায়ী এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর। ৮ মার্চ নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে এ সিটির।

সিলেট সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর। এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ৮ অক্টোবর। ১৩ মার্চ নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে।

খুলনা সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। ৩০ মার্চ নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে।

রাজশাহী সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর। এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ৫ অক্টোবর। ৯ এপ্রিল নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে।

বরিশাল সিটিতে ভোট হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ জুন। প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর। এ সিটির মেয়াদ পূর্ণ হবে আগামী ২৩ অক্টোবর। ২৭ এপ্রিল নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে দুই ভাগে পাঁচ সিটিতে ভোট নিতে প্রস্তাব করবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। এর মধ্যে গাজীপুর ও খুলনা সিটিতে ঈদের আগে এবং সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল সিটিতে ঈদের পরে নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।

১৭ মে রমজান শুরু হবে। এর আগে এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত এইচএসসি ভোট রয়েছে। সব মিলিয়ে জুনের আগে ভোট করতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, পাঁচ সিটিতে নির্বাচন আয়োজনে কোনো প্রকার ঝুঁকি নিতে চায় না ইসি। কোনো সিটি করপোরেশনের সীমানা বেড়েছে কি না, নতুন ওয়ার্ড হয়েছে কি না বা অন্য কোনো জটিলতা রয়েছে কি না-তা জানাবে সরকার।

ঢাকার মতো এই পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় যাতে কোনো ঝামেলায় পড়তে না হয়, তাই সবকিছু ঠিক করেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।

সব ধরনের জটিলতা শেষ করে এবার প্রস্তুতি নিয়েই তফসিল ঘোষণা করবে ইসি।

তাছাড়া সাধারণত বর্ষা ও রমজানের সময় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে চায় না ইসি। সব মিলিয়ে কমিশন সব দিক বিবেচনা করে আলোচনা করেই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করবে।

কর্মকর্তারা বলছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাজে লাগানো হবে। তাই অন্তত ছয় মাস আগে নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে।