শনিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে জাফর ইকবালের আশপাশে অবস্থানরতদের মধ্যে দুজন বাদে সবাই ছিলেন আয়োজকদের পূর্বপরিচিত।
চেয়ারে বসা জাফর ইকবালের ঠিক পেছনে ছিলেন হামলাকারী ফয়জুল। ছবিতে তার বাঁয়ে দ্বিতীয় জন মোটা-সোটা যুবককে তারা চেনেন না বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
সেখানে হামলাকারীর এক বা একাধিক সহযোগী ছিল বলে সন্দেহ তার।
তিনি বলেন, “প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে হামলাকারী একা এসে হামলা করবে তা দুরূহ। তার সহযোগী হিসেবে এক বা একাধিকজন থাকতে পারে। সে পরিকল্পিতভাবে সুযোগ খুঁজে এ হামলা করেছে। তাই এটা ধারণা করা খুব স্বাভাবিক তার সহযোগী কেউ থাকবে।”
অনুষ্ঠানের আয়োজক ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক জীবেশ কান্তি সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের উৎসবটা ছিল জাতীয় পর্যায়ের। এখানে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও অনেক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছিল। তাই আমরা সবাইকে চিনতে পারছি না।
সেখানে হামলাকারীর সহযোগী কেউ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন র্যাব-৯ এর অধিনায়ক লেফটেন্যাট কর্নেল আবু হায়দার আজাদ আহমদও।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এদের মধ্যে কেউ হামলাকারীর সহযোগী থাকাটা স্বাভাবিক, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।”
প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে পুলিশ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে জাফর ইকবালের ওপর এ ধরনের হামলা নিয়ে প্রক্টর জহির বলেন, “দুই বছরে থেকে স্যারের সাথে পুলিশ আছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সব সময় স্যারের সাথে পুলিশ দেখে আসছে। তাই সবার মনে একটা ধারণা বদ্ধমূল হিয়ে গিয়েছিল, স্যার সেইফ আছেন। হয়ত এই বিশ্বাসটাই একটা কারণ হতে পারে।”
তিনি বলেন, “একটা বড় উৎসবের দিনকে হামলাকারী বেছে নিয়েছে। কারণ এতে সকলের মনযোগ অন্যদিকে থাকবে। এ ধরনের উৎসবে স্যার সবার সাথে খোলাখুলিভাবে মেশেন। হামলাকারী স্যারের চলাফেরা আগে থেকেই জেনে থাকবে।”
এর আগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মুক্তমনা লেখক ও ব্লগারদের ওপর যেসব হামলা হয়েছিল সেসব ঘটনায় একাধিক ব্যক্তির জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রেও তেমনটাই সন্দেহ করা হচ্ছে।
তবে ফয়জুল কোনো জঙ্গি সংগঠনে জড়িত কি না বা তার সঙ্গে আর কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে কি না সে প্রশ্নের উত্তর র্যাব-পুলিশ এখনও খোলসা করেনি।
র্যাব কর্মকর্তা আজাদ আহমদ বলেন, “এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে সব বলা যাচ্ছে না। আমরা সব বিষয় সমানে রেখে ঘটনার হোতাদের বের করতে তদন্ত চালাচ্ছি।”
এদিকে পুলিশ সদর দপ্তরের ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মনিরুজ্জামান বিডিনিউজ টেয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তদন্তে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এই ঘটনায় একটি বিশেষায়িত টিম কাজ করছে।
“দুই-এক দিনের মধ্যে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে আশা করছি।”