সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন শনিবার রাতে জালালাবাদ থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ দায়েরের পর রোববার তা সন্ত্রাস দমন আইনের মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে শনিবার বিকালে একটি অনুষ্ঠান চলাকালে এক তরুণ ছুরি নিয়ে অধ্যাপক জাফর ইকবালের ওপর হামলা চালায়।
হামলার পরপরই ওই ফয়জুল নামের ওই মাদ্রাসাছাত্রকে ধরে ফেলেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। পরে তাকে পিটুনি দিয়ে র্যাবের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আহত অধ্যাপক জাফর ইকবালকে প্রথমে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। তিনি এখন শঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হোসেন রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলে, “কাল রাতেই আমরা জালালাবাদ থানায় অভিযোগ দায়ের করে এসেছি। সেখানে ফয়জুল ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।”
ঘটনার আগে অনুষ্ঠান মঞ্চে অধ্যাপক জাফর ইকবালের পেছনে দাঁড়ানো হামলাকারী তরুণের এই ছবি ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে
সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার বিকালে হামলার পর ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালকে।
বিভিন্ন সময়ে হুমকি পাওয়ায় ২০১৬ সালের অক্টোবরে জনপ্রিয় এই লেখকের জন্য পুলিশি পাহারার ব্যবস্থা করে সরকার। তার মধেই শনিবার প্রকাশ্যে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল থেকে আটক ২৪ বছর বয়সী ফয়জুল র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে নিজেকে মাদ্রাসা ছাত্র হিসেবে দাবি করে বলেন, জাফর ইকবাল ‘ইসলামের শত্রু’ বলে তাকে হত্যার জন্য সে হামলা চালিয়েছে।
র্যাব-৯ এর অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, ফয়জুল জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী। তবে তদন্ত ছাড়া এর বেশি এখনই বলা যাচ্ছে না।”
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আটক ফয়জুলকে শনিবার রাতে সিলেটের রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে র্যাব। রাত দেড়টার দিকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জালালাবাদ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।
চিকিৎসা শেষে শারিরিক অবস্থার উন্নতি হলে রোববার বিকালে ওই তরুণকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে র্যাব কর্মকর্তা আজাদ জানান।
জালালাবাদ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ফয়জুলের অবস্থা এখনো স্বাভাবিক হয়নি।
হামলার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফয়জুলের চাচা আব্দুল কাহের এবং মামা সুনামগঞ্জ জেলা কৃষকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুর রহমানকে পুলিশ ও র্যাব আটক করেছে।
এছাড়া আরও দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হলেও তাদের নাম আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রকাশ করেনি।