জাফর ইকবালের মাথায় চার আঘাত, হাত-পিঠে ছুরির জখম

নিজের ক্যাম্পাসে পুলিশি পাহারার মধ্যে আক্রান্ত অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের মাথায় চারটি আঘাতের ক্ষত পেয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া তার বাঁ হাত ও পিঠে ছুরিকাঘাতের জখম হয়েছে।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 March 2018, 04:13 PM
Updated : 3 March 2018, 10:03 PM

শনিবার বিকালে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উন্মুক্ত অনুষ্ঠানে হামলার শিকার হন জনপ্রিয় লেখক জাফর ইকবাল।

হামলার পরপরই তাকে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার পর রাতে তাকে ঢাকায় আনা হচ্ছে।

ওসমানি মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “উনার মাথায় চারটি আঘাত করা হয়েছে। এগুলো রডের আঘাত বলে মনে হচ্ছে। এছাড়া তার বাঁ হাত ও পিঠে ছুরিকাঘাতের জখম রয়েছে।”

জাফর ইকবালের শরীরে ২৫ থেকে ২৬টি সেলাই পড়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন উনি শঙ্কামুক্ত।”

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার বিকালে হামলার পর ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালকে।

ঢাকায় আনার উদ্দেশে রাত পৌনে ১০টার দিকে ওসমানি মেডিকেল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে জাফর ইকবালকে সিলেট বিমানবন্দরে নেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকায় আনা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জাফর ইকবালকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হবে বলে তার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ফেস্টিভ্যাল চলছিল ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক জাফর ইকবাল; সেখানেই তার উপর হামলা হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিকাল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে মঞ্চের পেছন থেকে একজন স্যারের মাথায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জহির উদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মঞ্চের পেছন থেকে এসে এক ছেলে ছুরি মারে গলা, বুক ও মুখের দিকে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশসহ অন্যরা তাকে আটক করে।”

অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপর হামলার পর এই তরুণকে ধরে পিটুনি দেয় শিক্ষার্থীরা

হামলাকারী তরুণকে ধরে পিটুনি দেয় শিক্ষার্থীরা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

কারা কী কারণে এই হামলা করেছে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছে না পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

এতে জঙ্গিদের হাত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে।

জাফর ইকবাল বরাবরই জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ। কয়েক বছর আগে লেখক, অধ্যাপক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের উপর জঙ্গি হামলার সময় জাফর ইকবালও হুমকি পাচ্ছিলেন। তখন তার পাহারায় পুলিশ মোতায়েন করে সরকার।