শনিবার বিকালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছুরি নিয়ে ওই হামলায় মাথায় জখম হয়েছে জাফর ইকবালের। সিলেটের ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ঢাকায় আনা হচ্ছে।
এই হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমবেত হন গণজাগরণ মঞ্চ ও প্রগতিশীল জোটের নেতাকর্মীরা।
‘সচেতন নাগরিক সমাজ’ ব্যানারে সাংবাদিক-সাহিত্যিকদের একটি দলও প্রতিবাদ জানাতে উপস্থিত হন সেখানে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সংগঠন ‘শ্লোগান একাত্তর’র সদস্যরাও সেখানে জড়ো হন।
রাত ৮টার দিকে মশাল নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন তারা। শাহবাগ থেকে মিছিলকারীরা টিএসসির দিকে যান, রাজু ভাস্কর্য ঘুরে আবার শাহবাগে এসে মিছিল শেষ করেন তারা।
জাফর ইকবালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতেই প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে জাফর ইকবালের ওপর এই হামলা হয়েছে।
হামলার দায় সরকার এড়াতে পারে না মন্তব্য করে ইমরান বলেন, “জাফর ইকবালের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকার নিয়েছিল। সুতরাং সরকারের নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেদ করেই এ হামলা হয়েছে। এ কারণে এর দায় সরকারেই নিতে হবে।”
তিনি বলেন, “কোনো রাজনীতিবিদের ওপর তো হামলা হয় না। হয় শুধু লেখক আর মুক্তবুদ্ধি চর্চাকারীদের ওপর। সরকার মনে করে, যারা এ রকম হামলা করে তাদের চেয়ে সরকারের বিরুদ্ধে যারা লেখালেখি করে তাদের ঠেকানো জরুরি। এ হামলার দায় সম্পূর্ণ সরকারের।”
তার ওপর হামলার প্রতিবাদে রোববার বিকাল ৪টায় শাহবাগে কর্মসূচির ডাক দিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, “যে পর্যন্ত সরকার হামলার ব্যাপারে আন্তরিক অবস্থান না নেবে এবং হামলাকারীদের পৃষ্ঠপোষকতা দেবে ততক্ষণ আমাদের আন্দোলন চলবে।”
জাফর ইকবালের ওপর এই হামলা দীর্ঘদিন ধরে সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রতি সরকারের ‘নতজানু আচরণের ফল’ বলে মন্তব্য করেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জিএম জিলানী শুভ।
তিনি বলেন, “জাফর ইকবালের ওপর যে হামলা হয়েছে তা কোনোভাবেই বিচারহীনতার সংস্কৃতির গড্ডালিকা প্রবাহে আটকে রাখা যাবে না।”
কবি আসলাম সানি বলেন, “যেভাবে অভিজিৎ, দীপনদের ওপর হামলা হয়েছে, সেভাবেই জাফর ইকবালের ওপরও হামলা হয়েছে। তারা একাত্তরে বুদ্ধিজীবীদের যেভাবে হত্যা করেছিল এখনও সেভাবে মুক্তবুদ্ধি চর্চাকারী ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।”
‘শ্লোগান একাত্তর’ ও বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর নেতাকর্মীরা জাফর ইকবালের ওপর হামলার প্রতিবাদে মিছিল করেন। তারা হামলাকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে নানা শ্লোগান দেন।