গ্রেপ্তাররা হলেন- নাইজেরিয়ার নাগরিক হেনরি এসিয়াকা (৪০) এবং বাংলাদেশি ইসমাইল হোসেন (৪৮)।
পিবিআইর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বশির আহমেদ বিডিনিউজ টেোয়ন্টিফোর ডটকমকে জানান, পশ্চিম কাফরুলের তাহমিনা পারভিন এবং তুরাগ থানা এলাকার নাজিয়া তাবাস্সুম শাওনের কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে দুই প্রতারকের নাম পাওয়া যায়।
পরে সংবাদের ভিত্তিতে তেজতুরী বাজার এলাকা থেকে শুক্রবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা বশির আহমেদ জানান, নাইজেরিয়ার নাগরিক হেনরি এসিয়াকা ছয় বছর আগে ফুটবলার হিসেবে আরামবাগের হয়ে খেলতে আসেন। পরে মাঝে মাঝে ডাক পড়লে খেলতে যান।
তার বিরুদ্ধে আগের আরো দুইটি মামলা রয়েছে বলে জানান তিনি।
বশির আহমেদ বলেন, “প্রতারণার অভিযোগে গত বছর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছিল হেনরি এসিয়াকাকে। সেখানেই পরিচয় হয় সন্ত্রাসের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ইসমাইল হোসেন সঙ্গে। তারা কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাতে এবং সেই ফাঁদে পা দেন তাহমিনা ও নাজিয়া।”
পিবিআইর এই কর্মকর্তা জানান, তাহমিনার অভিযোগ- গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ফেইসবুকে উইলিয়াম ডেভিড নামের একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে বিভিন্ন সময়ে তাদের চ্যাটিং হয়। একদিন কথিত উইলিয়াম ডেভিড তাকে উপহার দেওয়ার কথা বলে তার ঠিকানা চায়।
“তাহমিনা ঠিকানা দিলে কিছুদিন পরে এক ব্যক্তি নিজেকে কুরিয়ার সার্ভিসের লোক পরিচয় দিয়ে জানান তার একটি ডকুমেন্ট এসেছে, বিমান বন্দরে আটকা পড়েছে, ছাড়াতে টাকা লাগবে। চাহিদা অনুযায়ি তাহমিনা ৪৫ হাজার টাকা দেন তাদের দেওয়া একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। পরে আরেক দফা দেড় লাখ টাকা নেওয়া হয় কাস্টমস অফিসারকে ঘুষ দেওয়ার কথা বলে।
“উপহারের প্যাকেটে এক কোটি টাকার পাউন্ড রয়েছে বলা হয় এজন্য ট্যাক্স দিতে হবে, যার পারিমাণ প্রায় তিন লাখ টাকা বলে জানালে সে টাকাও চায় ডেভিড। এতে সন্দেহ হলে তাহমিনা এবং তার ছেলে সরাসরি দেখার করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে ডেভিড যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।”
বশির আহমেদ বলেন, “অন্যদিকে নাজিয়া নামের একজন অভিযোগ করেন গতবছর অগাস্টে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষক পদে চাকরির জন্য তিনি অনলাইনে আবেদন করেন। কয়েকদিন পর তার মোবাইলে একজন ফোন ইংরেজিতে কথা বলে জানায়, চাকরির জন্য এক লাখ টাকা ঘুষ দিতে হবে। এজন্য প্রাথমিকভাবে তিনি ৪০ হাজার টাকা একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে চান।
“কাউকে না বলে ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকাও পাঠিয়ে দেন নাজিয়া। পরে যোগোযোগ করার চেষ্টা করে ওই ব্যক্তির মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে নাজিয়া বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন।”
তিনি জানান, দুইটি অভিযোগ পাওয়ার পর গোপনে তদন্ত করা হয়।
“আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুইটি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র পাওয়া যায়। ওই বিদেশিকে ইসমাইল সহায়তা করত।”
যাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা গেছে তাদেরও খোঁজা হচ্ছে বলে জানান তিনি।