শওকত আলীকে চেনাতে গণমাধ্যমের ‘ভূমিকা নগন্য’

শওকত আলী যে মাত্রার কথাসাহিত্যিক, জীবদ্দশায় তার সেই মূল্যায়ন হয়নি বলে খেদ প্রকাশ করেছেন নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Feb 2018, 04:12 PM
Updated : 25 Feb 2018, 04:52 PM

তিনি বলেছেন, “শওকত আলীর সাহিত্যের শক্তি কখনও প্রচারে আসেনি। তিনি একটি উপন্যাস সৃষ্টি করতে একটি ভাষা তৈরি করেছিলেন। শওকত আলীকে চেনাতে গণমাধ্যমের ভূমিকা নগন্য।”

সদ্য প্রয়াত এই কথাসাহিত্যককে স্মরণে তার জেলা দিনাজপুরের ঢাকাস্থ সাংবাদিকদের আয়োজনে রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সভায় একথা বলেন মামুনুর রশীদ।

গত ২৫ জানুয়ারি শওকত আলী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।

স্মরণসভায় সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “শওকত আলী ব্যক্তি হিসেবে যতই নিভৃতচারী হোক,  তার সাহিত্য উচ্চকিত। তিনি কোনো অঞ্চলের নন, গোটা বাংলা সাহিত্যের ক্ষেত্রে একটা বড় ধরনের অবদান রেখে গেছেন।  তার সাহিত্যের বৈশিষ্ট হচ্ছে- মানুষ ও নিচের তলার মানুষ তথা প্রান্তিক জনগোষ্টির জীবন-কর্ম। লেখক শিবির আন্দোলনেও তিনি একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন।

“যদিও তিনি (শওকত আলী) একুশে পদকে ভুষিত হয়েছেন, বাংলা একাডেমি পদকে ভুষিত হয়েছেন। তারপরও তাকে নিয়ে আরও অনেক বেশি সন্মান ও মর্যাদা দেওয়ার কর্তব্য আমাদের রয়েছে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক সেনাপ্রধান মাহবুবুর রহমান বলেন, “শওকত আলী ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার ব্যতিক্রমধর্মী সাহিত্যিক, যারা প্রান্তিক মানুষ তাদের কথা তার সাহিত্যে উঠে এসেছে।

“আমি নিজেকে ধন্য মনে করি, তিনি (শওকত আলী)  দিনাজপুরের সন্তান। তিনি উত্তরবঙ্গে সন্তান হয়ে যেভাবে বাংলা সাহিত্যকে পরিচিত করেছেন এজন্য আমরা তার কাছে ঋণী।”

গণশিক্ষামন্ত্রী ও দিনাজপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার অনুষ্ঠানে বলেন, “কী বিশাল মাপের ঔপন্যাসিক উনি, আমারই অজানা ছিল। আজকের এই স্মরণ সভায় আসতে পেরে আমি ধন্য। এখানে এসে তার সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। আমি আয়োজকদের বলেছি, তার উপন্যাসগুলো আমার প্রয়োজন, যদি তা থেকে আমারও জ্ঞানভাণ্ডারে কিছু যোগ হয়।”

ঢাকাস্থ দিনাজপুর সাংবাদিক সমিতির আহ্বায়ক মূর্তজা হায়দার লিটনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মিজানুর রহমানের পরিচালনায় এই স্মরণ সভায় কবি মুজতবা আহমেদ মুরশেদ প্রয়াত শওকত আলীর উপর মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন।

আলোচনায় অংশ নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও গবেষক শফিক মাহতাব, দিনাজপুর সরকারি কলেজের অধ্যাপক ড. মাসুদুল হক, মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, রংপুর বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল কবির আসিফ  প্রমুখ।

প্রয়াত শওকত আলীর ছেলে আসিফ শওকত কল্লোলের স্ত্রী ফারজানা আফরোজ পারুল শ্বশুর শওকত আলীর জীবনের শেষ সময়ের কিছু স্মৃতি তুলে ধরেন। 

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনাজপুর ছাত্র কল্যাণ সমিতির সদস্যরা ছাড়াও দিনাজপুর থেকে আসা সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘নবরূপী’ কর্মকর্তারাও ছিলেন।