একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাংলা একাডেমিতে এক আলোচনা সভায় এসে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রযন্ত্রের পুঁজিবাদী মনোভাবের কারণে গোটা দেশে সাংস্কৃতিক চর্চা যখন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তখন দেশে যেভাবে একুশ উদযাপন হচ্ছে, তা সঠিক পথে হচ্ছে না।”
বুধবার বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে বক্তৃতা। এতে যোগ দিয়ে ‘একুশে ফেব্রুয়ারির লক্ষ্য কী, অর্জনের পথ কোন দিকে’ শীর্ষক বক্তৃতায় এসব কথা বলেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির সভাপতি এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
“তখন বাঙালির মধ্যে যে জাতীয়তাবাদী চেতনার স্ফূরণ ঘটেছিল, তা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পরে আর থাকেনি। পরে নেতৃত্ব চলে গেল পুঁজিবাদীদের হাতে। যুদ্ধ শেষে সামাজিক বিপ্লবের স্বপ্ন চাপা পড়ে গেছে।”
বাহাত্তরের সংবিধানের মূল নীতি থেকে রাষ্ট্র বিচ্যুত হয়ে পড়ায় বরাবরই ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “সমাজতন্ত্র পালিয়ে গিয়ে মুখ রক্ষা করেছে। ধর্মনিরপেক্ষতার যেন এক কঙ্কালসার দশা। বুর্জোয়াদের একাংশ এখন আন্তর্জাতিক সুবিধা ভোগ করে চলেছে। সুবিধাভোগী পেটি বুর্জোয়ারা এখন দেশের টাকা বাইরে পাচার করে দিচ্ছে।”
একুশের বইমেলার চেতনাকে দিকে দিকে ছড়িয়ে দিতে হলে দেশের আনাচেকানাচে পাঠাগারভিত্তিক সংস্কৃতিচর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
মেলার নানা আয়োজন
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমিতে বইমেলার মূলমঞ্চে সকাল সাড়ে ৭টায় শুরু হয় স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর। এতে শতাধিক নবীন-প্রবীণ কবি কবিতা আবৃত্তি করেন। সভাপতিত্ব করেন কবি কামাল চৌধুরী।সন্ধ্যায় ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
নতুন বই
মেলার ২১তম দিনে নতুন বই এসেছে ৩৯০টি।
বাংলা একাডেমি থেকে এসেছে কাজী সাজ্জাদ আলী জহিরের ‘বীর শ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর’, শামসুজ্জামান খানের ‘বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা (কুমিল্লা) ‘, এ কে এম নূরুল ইসলাম-এস এম হারুন-অর-রশীদের ‘বিজ্ঞান তৃতীয়কোষ (তৃতীয় খণ্ড)’, যুক্ত থেকে এসেছে সনৎকুমার সাহার ‘বিনি সুতায় গাঁথা’, চিত্রা প্রকাশনী থেকে এসেছে দিলারা হাফিজের ‘আনন্দ বেদনাযজ্ঞে রফিক আজাদ’, মহাকাল থেকে এসেছে সেলিনা হোসেনের ‘নির্বাচিত কিশোর গল্প’, মাওলা ব্রাদার্স থেকে এসেছে মহাদেব সাহার ‘আমার গান’, লেখাপ্রকাশ থেকে এসেছে রফিকুল ইসলাম রতনের ‘অগ্নিঝরা মার্চ ও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা’, কথাপ্রকাশ থেকে এসেছে মুনতাসীর মামুনের ‘সংবাদ সাময়িকপত্রে ঢাকার নওয়াব পরিবার’, জ্ঞানকোষ প্রকাশনী থেকে এসেছে মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘বিগ ব্যাং থেকে হোমো স্যাপিয়েনস’, নবযুগ থেকে এসেছে রামেন্দু মজুমদারের ‘বাংলাদেশের নির্বাচিত নাটক’।