ত্রুটিপূর্ণ বই প্রকাশকদের মেলায় নিষিদ্ধ করা উচিৎ: হাসনাত আবদুল হাই

শব্দ চয়ন ও বাক্য বিন্যাসে দুর্বলতা, ভুল অনুবাদে ভরপুরসহ নিম্নমানের সাহিত্য রচনার দায়ে অভিযুক্ত হলে প্রকাশকদের গ্রন্থমেলায় নিষিদ্ধ করা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন কথাসাহিত্যিক হাসনাত আবদুল হাই।

জয়ন্ত সাহাবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2018, 09:43 PM
Updated : 19 Feb 2018, 09:43 PM

সোমবার বাংলা একাডেমিতে এক আলোচনা সভায় যোগদান শেষে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি মেলার পরিবেশ, প্রকাশনার মান ও তরুণ কথাসাহিত্যিকদের নিয়ে নিজের মতামত জানান।

হাসনাত আবদুল হাই বলেন, “মেলায় প্রতি বছর বইয়ের সংখ্যা বাড়ছে। আসছে নতুন প্রকাশনা সংস্থাও। কিন্তু সব প্রকাশনীর মান ভালো নয়। কিছু প্রকাশনীর বই তো খুব নিম্নমানের। বাংলা একাডেমির উচিৎ, এসব ত্রুটিপূর্ণ বইগুলোর পাশাপাশি প্রকাশনাগুলোকেও মেলায় ডিসকোয়ালিফাই করা। তাদের স্টল বরাদ্দ দেওয়াই উচিৎ নয়।

“একটা জরিপ করে এসব পাবলিকেশনের নাম উল্লেখ করে একটা তালিকা টানাতে হবে, এতে করে এরা একটু লজ্জা পাবে। বইমেলার আগে বাংলা একাডেমির শর্তগুলো আরও কড়াকড়ি করতে হবে।”

তিনি বলেন, “বইমেলায় অনেক বই প্রকাশ হচ্ছে, গল্প-কবিতা আর উপন্যাস। কিন্তু মননশীল ও গবেষণাধর্মী লেখা অনেক কম হচ্ছে। সমাজ ও সংস্কৃতি নিয়ে আরও অনেক বেশি কাজ করার রয়েছে। সেটা হোক গবেষণা, প্রবন্ধে বা আমাদের গল্প-সাহিত্যে।”

বইমেলায় তারুণ্যের উচ্ছলতায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে হাসনাত আবদুল হাই বলেন, “বাঙালির সংস্কৃতি জীবনে এই তো বড় পাওনা।

“খাওয়া, দাওয়া বা নাওয়া খাওয়া নয়, নেই কোনো নাচ-গানের আসর; তবুও তরুণরা ছুটে আসছে এই বই মেলায়। এখানে যেদিকে তাকাই শুধু বই আর বই। সেই বইয়ের টানে আসা তরুণের দলটি মেলায় শুধু ঘুরে বেড়াচ্ছে তা কিন্তু নয়। ওরা বই কিনছে, বই নিয়ে আলোচনা করছে। এ যে কত বড় পাওনা আমাদের!”

মূল মঞ্চের আয়োজন

সোমবার গ্রন্থমেলার ১৯তম দিনে বিকালে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।

হাসনাত আবদুল হাইয়ের সভাপতিত্বে এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সাবেক সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, সেলিম জাহান, কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ ও ফাহমিদা খাতুন।

প্রাবন্ধিক বলেন, “বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দোরগোড়ায়। পদ্মাসেতু দৃশ্যমান, রেলের ব্রডগেজিকরণ ও ডাবল লাইনিং অচিরেই হবে, ২০১৮ সালেই ২০,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের হাতছানি। বাংলাদেশ পাঁচ উন্নয়ন সহযোগী চীন, জাপান, ভারত, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও বিশ্ব ব্যাংক চার হাজার কোটি মার্কিন ডলারের সমতুল্য আর্থিক ঋণ সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় তাদের আস্থা প্রকাশ করেছে। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে কল্যাণ রাষ্ট্র সোনার বাংলা গড়ার সম্ভাবনা বাংলার দিগন্তে উঁকি দিচ্ছে।”

নতুন বই

গ্রন্থমেলার ১৯তম দিনে নতুন বই এসেছে ১২৯টি। এগুলোর মধ্যে গল্প ২২টি, উপন্যাস ২৪টি, প্রবন্ধ ১১টি, কবিতা ৫৩টি, ছড়া ৩টি, শিশু সাহিত্য ৩টি, জীবনী-২টি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ৩টি, বিজ্ঞান ১টি, ভ্রমণ-২টি, রম্য/ধাঁধাঁ-১টি, অনুবাদ-৩টি, সায়েন্স ফিকশন-১টি, অন্যান্য বিষয়ে ১২টি বই এসেছে।