খালেদার ভোট করার বিষয়ে আদালতের দিকে তাকিয়ে ইসি

দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন কাজ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Feb 2018, 12:50 PM
Updated : 19 Feb 2018, 01:03 PM

সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে তার খাস কামরায় সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সিইসি।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে খালেদা জিয়া গত ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যাওয়ার পর থেকে তার নির্বাচনে অংশ নেওয়া, না নেওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে।

আইন অনুযায়ী, ফৌজদারি মামলায় কারও ন্যূনতম দুই বছর কারাদণ্ড হলে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন। কিন্তু বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে এবং উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এই আইন অনুযায়ী খালেদা জিয়া ভোট করার যোগ্যতা হারিয়েছেন; তবে আপিল করলে বিষয়টি হবে ভিন্ন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের পর বিষয়গুলো তুলে ধরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক খালেদার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি আপিল বিভাগ এবং নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেন।

এক্ষেত্রে আদালতের দুটি ভিন্ন রায় থাকার কথাও জানিয়েছিলেন মন্ত্রী। একটি রায়ে আপিলে সাজা স্থগিত হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বাধা না থাকার কথা বলা হয়। তবে আরেকটি রায়ে বলা হয়, আপিল চলাকালে দণ্ডভোগ স্থগিত হলেও দণ্ড স্থগিত হবে না।

গত বুধবার ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদও বিষয়টি আদালতের বলে মন্তব্য করেছিলেন।

একই কথার পুনরাবৃত্তি করে সিইসি কেএম নূরুল হুদা বলেন, “এখন যে অবস্থানে আছেন, এখন তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। এখন তিনি কনভিকটেড। এরপর সুপিরিয়র কোর্টে গেলে যেরকম নির্দেশ দেবে সেরকম হবে। উচ্চ আদালতের নির্দেশের ওপরে আমাদের কাজ করতে হয়।”

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “তারা যদি আপিল করে তখন একটা পরিস্থিতি। এখন পর্যন্ত আপিল করেনি এখন একটা পরিস্থিতি। যেহেতু আপিল করেনি তার মানে কনভিকশন অবস্থায় আছে। সুতরাং এই অবস্থায় তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। তারপরে উচ্চ আদালতে গেলে কিরকম ডিরেকশন আসে তার ওপরে নির্ভর করে আমাদের ডিসিশন হবে।”

বিএনপি নির্বাচনে না আসলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না- এর আগে তার এমন মন্তব্যের বিষয়ে সিইসি বলেন, “আমাদের উচ্চ আদালত আছে, সুপ্রিম কোর্ট আছে, তারপর আমরা আছি। আশা করি এই সমস্যার সমাধান হবে। এবং আমি এও আশা করি যে, খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক এবং সব সমস্যার সমাধান করে। এটা আমার প্রত্যাশা। এখন কোর্টের যে ডাইরেকটিভস, সেটা তো আমাদের মানতে হবে।”

বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা সংশোধন সংক্রান্ত অনুলিপি হাতে পেলেও এ নিয়ে মন্তব্য করেননি সিইসি।

এর আগে বেলা ২টা ১০ মিনিটে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে আসেন সিইসি নুরুল হুদা।

সিইসি-আরএফইডি কার্যনির্বাহী কমিটির সৌজন্য সাক্ষাৎ

 

বেলা ১২টায় সিইসি নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে সৌজন্য বৈঠক করেন সিইসি।

এসময় পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিক ও সাংবিধানিক সংস্থাটির পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়।

ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান, জনসংযোগ পরিচালক যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান, আরএফইডি সভাপতি সোমা ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মঈনুল হক চৌধুরীসহ সংগঠনের কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।