আইন অনুযায়ী, ফৌজদারি মামলায় কারও ন্যূনতম দুই বছর কারাদণ্ড হলে তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন। কিন্তু বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে এবং উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের পর বিষয়গুলো তুলে ধরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, “উনার (খালেদা) ব্যাপারে আপিল বিভাগ এবং স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটা তাদের ব্যাপার।”
এক্ষেত্রে আদালতের দুটি ভিন্ন রায় থাকার কথাও জানিয়েছিলেন মন্ত্রী। একটি রায়ে আপিলে সাজা স্থগিত হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বাধা না থাকার কথা বলা হয়। তবে আরেকটি রায়ে বলা হয়, আপিল চলাকালে দণ্ডভোগ স্থগিত হলেও দণ্ড স্থগিত হবে না।
বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলের এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে এলে এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে সাজার রায় হওয়ার ছয় দিন পর নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক এ বক্তব্য এল।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের বছরের শুরুতে এই রায়ের পর বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে আসছেন, খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়ার জন্য এই পরিকল্পনা এঁটেছে আওয়ামী লীগ।
ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, তারা সংবিধান ও আইন অনুযায়ী সবকিছু করবেন।
ইসির স্বাধীন ভূমিকা চায় ইইউ
সবার অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে ‘স্বাধীন ও বিশ্বস্ত’ নির্বাচন কমিশন দেখতে চাওয়ার কথা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলের নেতা জ্যঁ ল্যামবার্ট সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় ইইউ। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে হবে।
যেন সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সিইসি নূরুল হুদার সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে জ্যঁ ল্যামবার্টের নেতৃত্বে আট সদস্য অংশ নেন।
ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, “তারা আগামী সংসদ এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল। সিইসি তাদেরকে বলেছেন, রাষ্ট্রপতি পদে সংসদ সদস্যরা ভোট দেন। এবার যেহেতু একজন প্রার্থী ছিলেন। তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।”
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বা নির্বাচনে সহিংসতার বিষয়ে কোনো প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা হয়নি বলে জানান তিনি।
হেলালুদ্দীন বলেন, “প্রতিনিধি দল মূলত আমাদের নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। নির্বাচনী খরচের সার্বিক তথ্যও জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযারী তা সরকার বহন করে থাকে।”