তিনি মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেছেন, “খালেদা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন, সেই মামলায় তিনি কারাবন্দি আছেন। এছাড়া কোনো মামলায় তাকে শোন অ্যারেস্ট কিংবা এ ধরনের কোনো কিছু আমলে আনা হয়নি।”
নাশকতার মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে গ্রেপ্তার দেখানোর যে খবর ছড়িয়েছে, তা ভুল বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
“তার নামে সে সমস্ত ওয়ারেন্ট রয়েছে সেগুলোতে তাকে আটক দেখানো হয়নি। এটা একটা ভুল ইনফরমেশন ছড়িয়েছে। তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত যেটাতে, সেটাতেই তিনি কারাবরণ করছেন।”
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি আদালত ৫ বছর কারাদণ্ডের রায় দেওয়ার পর খালেদা এখন ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি।
রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার পর বিএনপির আইনজীবীরা আপিল করে জামিন চাইবেন। তবে তা এখনও না পাওয়ার জন্য সরকারকে দায়ী করে আসছেন তারা।
এর মধ্যে বিভিন্ন সংবাদপত্রে খবর এসেছে, নাশকতার তিনটি মামলায় খালেদাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এতিমখানা দুর্নীতির মামলায় খালেদার জামিন হলেও তাকে আটকে রাখার জন্য ওই সব মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে প্রতিক্রিয়াও জানান বিএনপি নেতারা। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওই তথ্যটিই ভিত্তিহীন বলে জানালেন।
এদিকে আরও দুটি দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে কারাগারে পরোয়ানা (প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট) গেছে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সেগুলোতে তিনি যথাসময়ে কোর্টে যাবেন, এখানে আমাদের কিছু করার নেই। ওই দুটি মামলায় তিনি জামিনেও আছেন।”
তিনি বলেন, “কোনোটাই (অ্যারেস্ট) দেখানো হবে না, যদি উনি সময়মতো কোর্টে হাজির হন। এখানে তো অন্য কিছু নেই। উনি কোর্টে হাজির হবেন, কোর্ট ডিসিশন নেবে। কোর্ট কী করবেন, তাকে অ্যারেস্ট দেখাবেন, না কী করবেন, সেটা তো আমাদের কিছু করার নেই।”
সাজাপ্রাপ্ত খালেদা বর্তমানে কারাগারে থাকলে কারা কর্তৃপক্ষই মামলার নির্ধারিত দিনে তাকে আদালতে নিয়ে যাবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
“কোর্ট থেকে যেসব সিদ্ধান্ত আসছে আমরা সেগুলো বাস্তবায়ন করছি। এখানে কোনো রাজনৈতিক প্রভাব বা রাজনৈতিক অভিলাষ নেই। কোর্টের সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো কিছু হচ্ছে না।”
খালেদাকে পরিত্যক্ত কারাগারে রাখায় বিএনপির সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় কামাল বলেন, “তার সুবিধার জন্যই তাকে এই কারাগারে রাখা হয়েছে। দীর্ঘ পথে কাশিমপুরে নিয়ে গেলে, অনেক ধরনের অসুবিধা হত।
“তার একটা সামাজিক ভ্যালুও রয়েছে, তিনি একাধিকবার দেশের প্রাইম মিনিস্টার ছিলেন। এ সমস্ত চিন্তাভাবনা করেই তাকে একটা সুন্দর জায়গায় অবস্থানের জন্যই ঢাকায় এই কারাগোরে রাখা হয়েছে।”
কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারে নারী ওয়ার্ড নেই বলে সেখানে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আসেনি বলে জানান তিনি।
“এখানে সব ফ্যাসিলিটি আছে, সব ফ্যাসিলিটি তাকে দেওয়া হচ্ছে। তিনি যে ফ্যাসিলিটি পাবেন সব তাকে দিচ্ছি। কাজেই কারাগার নিয়ে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই। জেলকোড অনুযায়ী ডিভিশনে যেসব সুবিধা পাওয়ার কথা সবই তিনি পাচ্ছেন।”
তিনি বলেন, “আপনারা দেখেছেন সেদিন পুলিশের থেকে রাইফেল ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে পুলিশের রাইফেল ভাঙার দৃশ্য। আপনারা দেখেছেন প্রিজন ভ্যানকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে ভাঙার দৃশ্য। তালা ভেঙে আসামি নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য আপনারা দেখেছেন। সেজন্য আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে যাদের চিহ্নিত করতে পারছি তাদের আমরা গ্রেপ্তার করছি, এর বাইরে কাউকে গ্রেপ্তার করছি না।”
প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের প্রতিদিনই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “যারা এর সঙ্গে যুক্ত আছে তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি, কারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করছি।
“আমরা গ্রেপ্তার করে জানিয়ে দিচ্ছি। প্রশ্ন ফাঁস হলো কি না, সেটা শিক্ষামন্ত্রী জানেন। প্রশ্ন ফাঁসের যারা চেষ্টা করছে, পয়সা লেনদেন করছে তাদের চিহ্নিত করছি।”