সরকারের সামনে আনা প্রকল্পগুলো দুর্নীতির প্রতীক: আনু মুহাম্মদ

যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে সরকার সাফল্য হিসেবে দেখাচ্ছে সেসব প্রকল্প সরকারের ‘দুর্নীতি, অনিয়ম ও নিপীড়নের’ প্রতীক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Feb 2018, 07:31 PM
Updated : 12 Feb 2018, 07:31 PM

রামপাল প্রকল্প বাতিল, জাতীয় কমিটির বিকল্প প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন ও কমিটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সারাদেশে কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তিনি।

আনু মুহাম্মদ বলেন, “আপনারা বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীবর্গের মুখে বিভিন্ন সময় সরকারের সাফল্যের কথা শুনে থাকেন। বাংলাদেশের বহু স্থানে বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে, টেলিভিশনের প্রতিদিন বহু বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এই বিজ্ঞাপন ও বিলবোর্ডের মাধ্যমে দেশের মানুষকে বলা হয়, বিদ্যুৎখাতে সরকারের বিপুল সাফল্য এসেছে।

“সেই বিদ্যুৎখাতের সাফল্যের অংশ হিসেবে বলা হয়- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং  দেশের উপকূলজুড়ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, আমদানি করা এলএমজি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, এই ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে সরকারের সাফল্য হিসেবে বলা হয়।

“কিন্তু আমরা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি, যেগুলোকে সরকার সাফল্য হিসেবে দেখাচ্ছে এই সকল প্রকল্পগুলোই সরকারের এক একটি কলঙ্ক হিসেবে ইতিহাসে লিখিত থাকবে। কারণ, এসব প্রকল্প হচ্ছে দুর্নীতির এক একটি প্রতীক, অনিয়মের প্রতীক, এ সমস্ত প্রকল্প হচ্ছে নিপীড়নের এক একটি প্রতীক।”

এসব নিয়ে জনগণকে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে স্থানীয় ৪০ থেকে ৫০ লাখ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় পড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

“আমাদের হিসাবে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ লাখ লোক সম্পূর্ণ নিরাপত্তাহীনতার মধ্য বাস করছে। সেই মানুষেরা এই বিষয়ে কিছুই জানে না। তাদেরকে কিছুই বলা হয় না। ওইখানে কোনো কথা বলতে গেলে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ সবাই হামলা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।”

এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ‘আইনি বাধা’ ঠেকাতে সরকার ‘দায় মুক্তি আইন’ জারি করেছে মন্তব্য করে আনু মুহাম্মদ বলেন, “এর বাজেট নিয়ে কোনো প্রশ্ন আইনগতভাবে তোলা যাবে না, এই প্রকল্পগুলোর ব্যয়ের কোনো ঠিক নাই, পরিবেশগত সমীক্ষার কোনো ঠিক নেই। এর কারণে বাংলাদেশ কত ভয়াবহ বিপদে পড়বে সেই সম্পর্কে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই।”

সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্সের সঞ্চালনায় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আজিজুর রহমান, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতা বজলুর রশিদ ফিরোজ।

সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল হাই কোর্টের কদম ফোয়ারা ঘুরে পল্টন মোড় হয়ে সিপিবি কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।