ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশনা স্থগিত

প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে পরীক্ষা শুরুর সময় ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে রাখার নির্দেশনা থেকে সমালোচনার মুখে সরে এসেছে সরকার।  

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Feb 2018, 04:12 AM
Updated : 12 Feb 2018, 08:08 AM

টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি থেকে সোমবার সকালে সব ইন্টারনেট গেটওয়েকে নতুন এক নির্দেশনা পাঠিয়ে বলা হয়েছে, আইএসপি ও মোবাইল অপারেটরদের ইন্টারনেটের গতি কমানোর বিষয়ে আগের নির্দেশনা স্থগিত থাকবে। 

অবশ্য নতুন এই নির্দেশনা কার্যকরের আগেই সকাল ৮টা থেকে আধা ঘণ্টার মত ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়েছে গ্রাহকদের।

এর আগে রোববার রাত ১০টা থেকে আধা ঘণ্টা পরীক্ষামূলকভাবে দেশের সব ইন্টারনেট প্রোভাইডারের ব্যান্ডউইথ সেকেন্ড ২৫ কিলোবিটের মধ্যে সীমিত রাখা হয়।

ওই গতিতে কোনো ধরনের যোগাযোগ সম্ভব না হওয়ায় ওই আধা ঘণ্টা ইন্টারনেট কার্যত বন্ধই থাকে। 

সেই সঙ্গে এসএসসির আগামী সবগুলো পরীক্ষার শুরুতে আড়াই ঘণ্টা ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে রাখতে বলা হয় বিটিআরসির নির্দেশনায়। কোন তারিখে কখন থেকে কখন ইন্টারনেটে গতি কম থাকবে, তার একটি তালিকাও দেওয়া হয়। 

এদিকে সরকার ইন্টারনেটের গতি নিয়ন্ত্রণের পথে হাঁটায় বিমান চলাচল, আউটসোর্সিং, কল সেন্টার, সংবাদমাধ্যমের কাজসহ সব ধরনের যোগাযোগে বড় ধরনের জটিলতার শঙ্কা তৈরি হয়।  

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও সরকারের এ সিদ্ধান্তের তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। 

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার রোববার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ ধরনের সিদ্ধান্ত যারাই নিয়ে থাকুন, ইন্টারনেট সম্পর্কে তাদের ন্যূনতম ধারণা আছে কিনা আমার সন্দেহ হয়। প্রশ্নপত্র যে ফাঁস হয় সেটা ইন্টারনেটে হয় না। আগে ফাঁস হয় তারপর ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়ায়। ফাঁস হওয়া বন্ধ করতে হবে আগে।”

তার বিশ্বাস, এ ধরনের পদক্ষেপ প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে কোনো কাজে আসবে না, সেজন্য যেতে হবে গোড়ায়।

ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের (বোয়ান) আহ্বায়ক ইমরান বলেন, “প্রশ্নপত্র ছড়ানোর পেছনে জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এটা ইতিবাচক। কিন্তু এদের পেছনে কারা, কারা প্রশ্নপত্রটা ফাঁস করল- সেই অপকর্মকারীদের ধরার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকে আমরা দেখছি না।”

 
 
  
 
 

সকালে ইন্টারনেট বন্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত হওয়ার পর সরকারকে ফেইসবুকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর সাবেক সভাপতি বিডিজবস ও আজকের ডিলের প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাসরুর।

তিনি লিখেছেন, “প্রশ্নফাঁস এখন একটি জাতীয় বিপর্যয় I এটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েই মোকাবেলা করতে হবেI কিন্তু ইন্টারনেট বন্ধ রাখা কোনো সমাধান হতে পারে নাI সরকারকে ধন্যবাদ ইন্টারনেট বন্ধের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য I

“সবাইকে মিলে এখন ঠিক করতে হবে কিভাবে প্রশ্নফাঁস বিপর্যয়ের সমস্যা সমাধান করা যায় I প্রযুক্তির ব্যবহার করেই সমাধান করা সম্ভব I এর জন্য প্রথমেই দরকার সমস্যাটাকে স্বীকার করে নেওয়া, তারপরে সকলের সাথে আলোচনা করে বর্তমান 'সিস্টেম/প্রসেস পরিবর্তন' করে সমস্যার সমাধান করাI তবে এটি করতে হয়তো কিছুটা সময় লাগবেI কিন্তু শুরুটা করতে হবে এখনই।”I