ইন্টারনেট বন্ধের আগেই আইসিটি প্রশ্ন ফাঁস

প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষা শুরুর সময় মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হলেও তার আগেই ইন্টারনেটে বিভিন্ন ফেইসবুক ও মেসেঞ্জার গ্রুপে চলে এসেছে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন।

সাজিয়া আফরিনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Feb 2018, 11:58 AM
Updated : 11 Feb 2018, 03:21 PM

এসএসসিতে রোববার ছিল ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’ বিষয়ের পরীক্ষা। সকাল ১০টায় এ পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটে ‘helping hand’ নামে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপ থেকে উত্তরসহ ‘গ’ সেটের বহুনির্বাচনী প্রশ্ন দেওয়া হয়।

আধা ঘণ্টার মধ্যে ওই একই প্রশ্ন ও উত্তরের ছবি বিভিন্ন গ্রুপ ও পেইজে ছড়িয়ে পড়ে। পরীক্ষা শেষে ভাইরাল হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে পরীক্ষায় আসা প্রশ্ন হুবহু মিলে যায়।

ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আপনাদের মত অনেকেই আমাদের তথ্য দিয়ে সাহায্য করছে, আমরা সবারটাই গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ইন্টারনেট বন্ধে আজ একটু দেরি হয়ে গেছে। আজ মিটিং আছে মন্ত্রণালয়ে, পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে কী পদক্ষেপ নেব- তখন জানা যাবে।”

এবার এসএসসি পরীক্ষা শুরুর আগে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছিলেন, প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার দিনগুলোতে সীমিত সময়ের জন্য ফেইসবুক বন্ধ রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। পরে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তারা ‘অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা’ নেবেন। 

এর ধারাবাহিকতায় রোববার সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ রাখার জন্য মোবাইল অপারেটরগুলোকে নির্দেশনা দেয় বিটিআরসি। কিন্তু ইন্টারনেট বন্ধ করতে করতে সাড়ে ৯টা বেজে যায়।

১০টার পর মোবাইল ইন্টারনেট আবার সচল হয় বলে এক অপারেটরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।  

তবে ইন্টারনেট বন্ধের এই নির্দেশনা অন্যান্য পরীক্ষার দিনও বলবৎ থাকবে কি না- সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি বিটিআরসির কর্মকর্তারা।

এবার এসএসসির প্রথম পরীক্ষা থেকেই ‘PSC_JSC_SSC_HSC_Degree out question bank.(R)’, ‘PSC • JSC • SSC • HSC Exam Helping Center’, ‘SSC Question Out 2018’ নামের গ্রুপগুলোতে অসংখ্য আইডি থেকে প্রশ্নফাঁস হয়ে আসছে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদনে গ্রুপগুলোর নাম বহুবার এসেছে এবং গ্রুপগুলোর লিংক ও ফাঁস হওয়া প্রশ্নের নমুনা ঢাকা বোর্ড কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। তারপরও গ্রুপগুলো বন্ধের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

প্রথম চারটি পরীক্ষা শুরুর পৌনে এক ঘণ্টা বা আধা ঘণ্টা আগে প্রশ্ন ফেইসবুক, মেসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপে এলেও, ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষার পরীক্ষা থেকে প্রশ্ন ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে এক-দেড় ঘণ্টা আগেই।

ফেসবুক পেইজে- গ্রুপে চলছে প্রশ্ন ফাঁসের প্রতিযোগিতা। আগের পরীক্ষার প্রশ্ন সবার আগে দিয়েছে- এমন দাবি করে অসংখ্য আইডি থেকে পরের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে প্রতিদিন। কিন্তু মন্ত্রণালয়, বোর্ড বা পুলিশ ফাঁস ঠেকাতে পারছে না।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তপন কুমার সরকার বলেন, “আমাদের সংস্থাগুলো কাজ করছে। গোয়েন্দা বিভাগ ও বিটিআরসি পদক্ষেপ নিচ্ছে। ধাপে ধাপে আমরা সবাই চেষ্টা করে যাচ্ছি।”