রায় ঘিরে কড়াকড়িতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার রায়কে ঘিরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তার কড়াকড়ির মধ্যে পরিবহন সঙ্কটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2018, 06:34 AM
Updated : 8 Feb 2018, 06:55 AM

বৃহস্পতিবার মিরপুরের কয়েকটি পরীক্ষাকেন্দ্রের আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, পরীক্ষাকেন্দ্রে ঠিকসময়ে পৌঁছালেও সড়কে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে দ্বিগুণ খরচে তারা কেন্দ্রে পৌঁছান।

কল্যাণপুর থেকে মিরপুর ১০ নম্বরের মিরপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে এসেছেন মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিন্নী। বাস না থাকায় কিছু পথ হেঁটে, তারপর সিএনজিতে করে তিনি এসেছেন কেন্দ্রে।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোনো গাড়ি পাচ্ছিলাম না। খুব ভয় লাগছিল, পরীক্ষার হলে পৌঁছাতে পারি কিনা। সাড়ে ৯টার পরে কেন্দ্রে ঢুকলে রোল নম্বর লিখে রাখে।

রাস্তা ফাঁকা থাকায় আসতে বেশি সময় না লাগলেও তাদের ৩০০ টাকা গুনতে হয়েছে তিন্নীর মা হাফসা বেগম জানালেন।

“কিছু তো করার নাই, মেয়ের পরীক্ষা। একটু দেরি হলেই কেন্দ্রে ঢুকতে ঝামেলা হবে। তাই বাধ্য হয়েই চলে এসেছি। আর গাড়িও তো কম।”

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী সামিহা বিনতে বশীর তার মায়ের সাথে ৯টা ১০মিনিটে কেন্দ্রে এসে পৌঁছেছে। হাটখোলা রোডের বাসা থেকে প্রতিদিন রিকশায় এলেও বৃহস্পতিবার অটোররিক্শায় করে এসেছে।

একই কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী আবু রায়হান শাফির বাবা ব্যবসায়ী মাহমুদ উল্লাহ বলেন, রিকশা চড়ে আসতে তাকে অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি টাকা গুনতে হয়েছে।

“মগবাজার থেকে মতিঝিল রিকশা ভাড়া চেয়েছে ১০০ টাকা। শেষে ৮০ টাকায় এসেছি। অন্যান্য দিন ৫০ টাকা নেয়।”

রূপনগর থেকে মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরী ইন্সটিটিউট কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসা এক পরীক্ষার্থীর মা রানু বেগম গণপরিবহন সঙ্কটে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা তো ড্রাইভারদের হাতে জিম্মি। ওদের ইচ্ছা হলে গাড়ি চালাবে, নয়তো চালাবে না। ইচ্ছা হলে ভাড়া বাড়াবে- এটা আর নতুন কি।

“সাড়ে ১১ নম্বর থেকে এখানে রিকশা ভাড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা। অথচ আজকে এসেছি ৮০ টাকায়।”

মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে চার পাঁচজন পরীক্ষার্থী সাড়ে ৯টার পর কেন্দ্রে ঢোকে। তাদের সাথে আসা অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এদের সবার বাসা সেগুন বাগিচা এলাকায়। মতিঝিল আসার পথে বিএনপি কার্যালয়কে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা পেরিয়ে পৌঁছাতে তাদের দেরি হয়েছে।

ফজলুল করিম নামে একজন অভিভাবক বলেন, “আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলাম আজ বাচ্চাকে নিয়ে তাড়াতাড়ি বের হব। তবুও দেরি করে ফেললাম।”

এদিকে রায়কে ঘিরে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে উদ্বেগ থাকলেও কিছু শিক্ষার্থীর চোখ ছিল মোবাইল ফোনে। এ কেন্দ্রের সামনে সকাল ৯টার পর থেকেই পাঁচ-ছয়জন শিক্ষার্থী জটলা করে মোবাইলে প্রশ্ন দেখতে থাকেন।

প্রশ্ন পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে এক শিক্ষার্থী বলেন, “প্রশ্ন পেয়েছি, তবে তা কিছুটা ঝাপসা হওয়ায় দেখতে সমস্যা হচ্ছে।”

প্রশ্ন নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখন একটু দেখে নেই, শিওর হওয়ার জন্য। অনেকেই তো প্রশ্ন পায়। আমি না পড়লে আমিই তো পিছিয়ে যাবো।”

এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছানো ও সময়মত পরীক্ষা শুরু করা নিয়ে মতিঝিল, বেইলি রোড, সিদ্ধেশ্বরী, খিলগাঁও, মগবাজার ও কাকরাইল এলাকায় কোনো বিশৃঙ্খলা দেখা যায়নি।