প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, পুনর্নির্বাচিত হচ্ছেন আবদুল হামিদ

আরও কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় রাষ্ট্রপতি পদে পুননির্বাচিত হতে যাচ্ছেন মো. আবদুল হামিদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2018, 05:22 PM
Updated : 5 Feb 2018, 06:42 PM

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, সোমবার বিকাল ৪টায় ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময়।

এর মধ্যে কেবল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবদুল হামিদের মনোনয়নপত্রই জমা পড়ে।

সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ‘নির্বাচনী কর্মকর্তা’ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার কাছে মনোনয়নপত্র হস্তান্তর করেন।

মাত্র একটি মনোনয়নপত্র জমা হওয়ার তথ্য জানিয়ে ইসির জনসংযোগ পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) এসএম আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, “একমাত্র প্রার্থী হওয়ায় ৭ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র পরীক্ষার পর আইন-বিধি অনুযায়ী বিনা প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে।”

বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ফেরার পর শুধু ১৯৯১ সালেই রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন হয়েছিল। এরপর সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

তবে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হতে যাচ্ছেন কেবল আবদুল হামিদই। আর মাত্র দুই বারই রাষ্ট্রপতি পদে দায়িত্ব পালন করা যায় বলে এটাই হবে তার শেষ মেয়াদ।

আবদুল হামিদের মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা

সংসদ নির্বাচনের বছরে রাষ্ট্রপ্রধানের গুরুদায়িত্বে আবদুল হামিদকে বেছে নেওয়ার কারণ দেখিয়ে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের কাছে আছে অনেকেই। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, তিনিই জনগণের কাছে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য, জনগণের কাছে সর্বজন শ্রদ্ধেয়।

“রাষ্ট্রপতি তো দলের রাষ্ট্রপতি হবে না, দেশের রাষ্ট্রপতি। কাজেই ওই ধরনের একজন মানুষকেই খুঁজে নিয়েছি। জনগণের চিন্তা-ভাবনা, চোখের ভাষায় আবদুল হামিদই সর্বাধিক প্রত্যাশিত।”

বাংলাদেশের একুশতম রাষ্ট্রপতি হতে যাচ্ছেন আবদুল হামিদ। স্বাধীনতার পর থেকে ১৯ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৬ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই হিসাবে আবদুল হামিদ এই পদে সপ্তদশ ব্যক্তি।

আবদুল হামিদের জন্ম ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি, কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে। বঙ্গভবনের বাসিন্দা হওয়ার পরও নিজেকে হাওরের মানুষ বলে পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন তিনি। আনুষ্ঠানিকতার জীবন থেকে মুক্তি নিতে মাঝে-মাঝেই তিনি ছুটে যান নিজের এলাকায়।

আবদুল হামিদের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৫৯ সালে ছাত্রলীগে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে। ১৯৬১ সালে কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থাতেই তিনি যোগ দেন আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে। এক পর্যায়ে তাকে কারাগারেও যেতে হয়।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১৩ সালে তাকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়।

১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। এরপর ১৯৮৬ সালের দ্বিতীয় সংসদ,  ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ, ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ, ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ এবং সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন।

সপ্তম সংসদে ১৯৯৬ সালের ১৩ জুলাই থেকে ২০০১ সালের ১০ জুলাই পর্যন্ত ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালনের পর ২০০১ এর ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত স্পিকার হিসাবে সংসদ পরিচালনা করেন আবদুল হামিদ।

নবম সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো স্পিকার হন তিনি।

স্পিকারের দায়িত্ব পালনের সময় সংসদ সদস্যদের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন রসিক রাজনীতিক আবদুল হামিদ।