মঙ্গলবার বিকালে ঢাকায় হাই কোর্ট এলাকায় এই হামলায় বেধড়ক পিটুনির শিকার হয়েছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য, ভাংচুর হয়েছে তাদের গাড়ি-আগ্নেয়াস্ত্র।
বিএনপিকর্মীরা পুলিশের হাতে আটক দুই নেতাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার।
তিনি বলেছেন, হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে ৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জিয়া ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হাজিরার দিন বরাবরই বিএনপির নেতা-কর্মীরা হাই কোর্ট থেকে শুরু করে বকশীবাজার এলাকায় জড়ো হয়ে আসছেন। তাদের সঙ্গে মাঝে-মধ্যেই পুলিশের সংঘাত ঘটছিল।
ট্রাস্ট দুর্নীতির একটি মামলায় আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন ঠিক হওয়ার পর পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা চলছে। রায়ের দিন বিএনপি নেতা-কর্মীরা রাজপথে নামার প্রস্তুতিও নিচ্ছে।
এর মধ্যে মঙ্গলবার বিকালে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে ঢাকার জজ আদালতের বিশেষ এজলাসে হাজিরা দিয়ে খালেদা জিয়ার ফেরার পথে হাই কোর্ট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে বিএনপিকর্মীদের।
দুজনকে আটক করে প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে সেখান থেকে তাদের ছিনিয়ে নিতে বিএনপিকর্মীরা হামলা চালায় বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
উপকমিশনার মারুফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "তিনি (খালেদা জিয়া) আদালত থেকে ফেরার পথে হাই কোর্টের সামনে তার উপস্থিতিতেই পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলা করে দুজন নেতাকে ছিনিয়ে নেয় কর্মীরা।”
ছিনিয়ে নেওয়া ওই দুই নেতার নাম জানাতে পারেননি তিনি। তবে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের একজন হলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ওবায়দুল হক নাসির, অন্যজনের নাম সোহাগ।
হামলাকারীরা পুলিশের প্রিজন ভ্যানের কাচ ভেঙে ফেলে; কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে পেটানোর পাশাপাশি অস্ত্রও ভেঙে ফেলে তারা। আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের একজনের হাতে রক্তও দেখা যায়।
রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার আজিমুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কদম ফোয়ারার সামনে খালেদা জিয়ার বহর থেকে একটি প্রিজন ভ্যানের উপর অতর্কিত হামলা চালায় বিএনপি নেতাকর্মীরা।
“ভাংচুরের ঘটনায় তাদের বাধা দিতে গেলে তারা পুলিশের উপর হামলা চালায় এবং ইট নিক্ষেপ করে। এতে আমিসহ অন্তত চারজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।”
তবে আজিম দাবি করেন, ওই সময় প্রিজন ভ্যানে কোনো আসামি ‘ছিল না’।
উপকমিশনার মারুফ বলেন, “আমরা অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি। কোনো কারণ ছাড়াই তারা পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে। বহরে খালেদা জিয়া থাকায় আমরা বড় ধরনের অ্যাকশনে যাইনি।”
তবে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, পুলিশই তাদের উপর আগে আক্রমণ করেছিল।
শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাফর আলী বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুলিশের প্রিজন ভ্যান ভাংচুর, ইট নিক্ষেপ, পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।
পুলিশের গাড়ি, অস্ত্র ভাংচুর, পুলিশের উপর হামলা, আহত করা, সরকারি কাজে বাধার অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে ৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে উপকমিশনার মারুফ জানান।
এর আগে গত ৩ জানুয়ারিও খালেদা আদালত থেকে ফেরার পথে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের।
এছাড়া কয়েকদিন হাই কোর্ট এলাকায় বিএনপিকর্মীদের পুলিশ আটকে দিলে ফটক খোলা নিয়ে ধস্তাধস্তি হয়েছিল।