সরিয়ে নেওয়া হয়েছে লালবাগের হেলে পড়া ভবনের বাসিন্দাদের

রাজধানীর লালবাগ এলাকায় হেলে পড়া পাঁচ তলা ভবন থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2018, 11:45 AM
Updated : 21 Jan 2018, 12:47 PM

২/ই জগন্নাথ সাহা রোডের ওই ভবনের দশটি ইউনিটে অন্তত ৪৫ জন বসবাস করে আসছিলেন বলে লালবাগ থানার ওসি সুভাষ কুমার পাল জানিয়েছেন। 

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মী জিয়াউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ভবন হেলে পড়ার খবর পেয়ে রোববার বেলা আড়াইটার দিকে তাদের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং রাজউকের কর্মকর্তারাও সেখানে উপস্থিত হন।

রাজউকের অঞ্চল- ৫ এর অথরাইজড অফিসার আশীষ কুমার সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে তাদের মনে হয়েছে, ভবনটি ‘একটু কাত’ হয়ে গিয়েছে।

“দুটো বিল্ডিং পাশাপাশি লেগে আছে, এটুকু বোঝা যাচ্ছে। আপাত দৃষ্টিতে একটু হেলে আছে মনে হচ্ছে। পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা ছাড়া আর কিছু বলা সম্ভব না।”

ঝুঁকি এড়াতে ভবনটি খালি করা হয়েছে জানিয়ে আশীষ বলেন, “আমরা পুলিশের সহযোগিতায় ভবনের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে ভবনে তালা লাগিয়ে দিচ্ছি। পরে বিস্তারিত পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

লালবাগের ওসি সুভাষ কুমার পাল বলেন, “সতর্কতা হিসাবে রাজউক কর্মকর্তারা ভবনের বাসিন্দাদের সরে যেতে বলেছেন। রাজউক আবার অনুমতি দিলে পরিস্থিতি বুঝে তখন তারা ভবনে ফিরতে পারবেন।”

ওই ভবনের মালিক হাজী শওকত আলী (৭০) বা তার দুই-মেয়ের কেউ সেখানে থাকেন না। পাঁচ তলা ভবনের তিন কক্ষের দশটি ফ্ল্যাট তারা সাড়ে ১১ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় ভাড়া দিয়েছিলেন।

বাড়িওয়ালার নাতি এহসানুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দুই দিন আগে ভবনটি হেলে পড়লে একজন প্রকৌশলী ডেকে তারা বিষয়টি দেখান।

“ওই প্রকৌশলী বলেছিলেন, তেমন কোনো সমস্যা নেই। রাজউক থেকে ‘কিছু হয়নি’ বলে অনুমোদন এনে দেবেন বলেছিলেন। তার আগেই আজ পুলিশ আর রাজউক কর্মকর্তারা বাসায় চলে এসেছে।”

এহসানুল বলেন, ওই ভবন থেকে সবাই সরে গেছেন। ভবনটি বাসযোগ্য কিনা তা রাজউক ও বুয়েটের প্রকৌশলীরা পরীক্ষা করে দেখবেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে- কী করতে হবে।

বাড়িওয়ালার নাতির দাবি, ১৯৯২ সালে রাজউকের অনুমতি নিয়েই পাঁচতলা ভবনটি করা হয়েছিল। ভবনটির পাশে একটি লোহার কারখানায় হাইড্রলিক মেশিন ব্যবহার করা হয়। সেখানে সারাদিন মেশিন চলায় ভবনের ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে বলে তার অভিযোগ।

তবে ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রে যখাযথভাবে সব নিয়ম মানা হয়েছিল কি না- তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি রাজউকের অথরাইজড অফিসার আশীষ কুমার সাহা।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বাড়িটা অনেক আগের। এখনও আমরা চেক করিনি। আসলে পুরান ঢাকায় এত বিল্ডিং যে সব চেক করা সম্ভব হয় না। আমরা এখন চেক করে দেখব যে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা মেনে তৈরি করা হয়েছে কি না। হয়ত আগামীকাল আমরা জানাতে পারব।”