দুই আসামির পক্ষে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ থাকায় রোববার ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন নতুন দিন ঠিক করে দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আসামি তানভীর আহমেদ এবং গালিব হোসেনের পক্ষে হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ থাকায় শুনানি করা যাচ্ছেনা।
ইতোমধ্যে সাবেক নৌমন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মনের স্থগিতাদেশ খারিজ করেছে উচ্চ আদালত।
ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফ হওয়ায় রোববার খালেদা জিয়ার পক্ষে তাহাজিরা দেন তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া।
হাই কোর্ট থেকে এ আদালতে আসার পর মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন পড়ে ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর, গত বছরের ৮ জানুয়ারি, ৫ ফেব্রুয়ারি, ৫ মার্চ, ৯ এপ্রিল, ১৮ জুন, ২৩ জুলাই, ২০ অগাস্ট, ২৪ সেপ্টেম্বর, ৫ নভেম্বর এবং সবশেষ ১৭ ডিসেম্বর। কিন্তু সব তারিখেই শুনানি পিছিয়ে যায়।
খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তেজগাঁও থানায় গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী।
এই মামলা হওয়ার পরদিনই খালেদা ও কোকোকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছর ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।
এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদার রিট আবেদনে সাত বছর আগে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। সে সময় জারি করা রুল খারিজ করে গতবছর ৫ অগাস্ট রায় দেয় বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের বেঞ্চ।
মামলার স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয় ওই রায়ে। সে অনুযায়ী গত ৫ এপ্রিল ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান খালেদা জিয়া।
এ মামলার ২৪ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, কর্নেল আকবর হোসেন, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী এবং খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রাহমান কোকো মারা গেছেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, এমকে আনোয়ার, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, কর্নেল আকবর হোসেনর স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং একেএম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, প্রাক্তন নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রাক্তন সদস্য একে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, প্রাক্তন মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও প্রাক্তন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন।