গ্রামবাংলার এই ঐতিহ্যের সঙ্গে নগরে তরুণদের পরিচয় করিয়ে দিতে রঙ্গে ভরা বঙ্গ শুক্রবার সকালে আয়োজন করল ‘রসের মেলা’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় হয়ে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন কথাসাহিত্যিক হায়াৎ মামুদ।
আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে এসেছিলেন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সচিব আকতারী মমতাজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে এসেছিলেন বাংলা একাডেমির ফোকলোর বিভাগের পরিচালক শাহিদা খাতুন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউডার চারুকলার অধ্যাপক আলাউদ্দিন আহমেদ, কোরিয়ান উন্নয়ন সংস্থা কইকার কান্ট্রি ডিরেক্টর ক্যারি হিউনগু জুয়ে।
আকতারী মমতাজ বলেন, “রস উৎসব মনে করিয়ে দেয় পুরনো স্মৃতি। রস উৎসব মনে করিয়ে দেয়, বাঙালির রসবোধের কথা।”
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে উঠে আসা লোকজ উপাদানের গবেষক শাহিদা খাতুন বলেন, “রস উৎসব বাঙালির সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির উৎসব। আমরা অতীতের ঐতিহ্যকে ধারণ করে বাংলার আবহমান সংস্কৃতিকে আরো এগিয়ে নেব, এই শপথ নেই। আমরা যেন কোনোভাবেই ঐতিহ্যবিমুখ হয়ে না পড়ি, সেজন্য নগরে এ উৎসব বড় প্রয়োজন।”
মাটির কলসি আর ভারে করে এল খেজুর রস, সঙ্গে ছিল নলেন গুড়ের পিঠা। মুড়ি, মুড়কি আর বাতাসাই বা বাদ যাবে কেন! শীতের রাতে ‘দস্যি দলের’ রস চুরি, খেজুর গুড়ের পায়েস আর পিঠাপুলির স্মৃতিচারণ করলেন তারা। মাটির গ্লাসে আসা খেজুর রসে চুমুক দিতেই কজন হা-পিত্যেষও করলেন-‘কোথায় গেলো সেই শৈশব!”
শিশুসাহিত্যিক আহমেদ রিয়াজ এসেছিলেন সপরিবারে।
রাজধানীর খিলগাঁও থেকে সস্ত্রীক এসেছিলেন সাংবাদিক এস এম মুন্না।
তিনি বলেন, “খেঁজুর রসের স্বাদ কতদিন পাই না! সেই কবে ফেলে এসেছি ছেলেবেলা। গ্রামের এ ঐতিহ্যগুলোকে শহরে তুলে ধরে আয়োজকরা শুধু তরুণদের সংস্কৃতি সম্পৃক্ততা বাড়াচ্ছেন তা নয়- নগরে লোকজ ঐতিহ্যের চর্চা যেন বন্ধ হয়ে না যায়, এ উৎসবটি সে বার্তাও দেয় আমাদের।”
আবৃত্তিশিল্পী জুবাইদা লাবণী বলেন, “নগরে যে লোকজ উৎসবগুলো হয়, তার মধ্যে রস উৎসব একটু ব্যতিক্রম। উৎসবে খেজুর রসের সাথে শুনতে আসি লোকজ সুর।”
সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হয়ে উৎসবটি চলে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত।