ভিডিও দেখে খোঁজা হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের অস্ত্রধারীদের: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নারায়ণগঞ্জে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ও সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের দ্বন্দ্ব থেকে সংঘর্ষের সময় যারা অস্ত্র বহন করছিলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের খোঁজা হচ্ছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2018, 10:39 AM
Updated : 18 Jan 2018, 12:44 PM

সিটি করপোররেশনের হকার উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় সংঘর্ষ বাঁধে জেলাটিতে আওয়ামী লীগের দুই নেতা শামীম ও আইভীর সমর্থকদের। তখন অস্ত্র প্রদর্শনও হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল বৃহস্পতিবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ৫০ শয্যা থেকে একশ শয্যায় উন্নীতকরণ অনুষ্ঠানে এলে সাংবাদিকরা নারায়ণগঞ্জের অস্ত্রধারী নিয়ে তাকে প্রশ্ন করেন।

জবাবে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে যা যা করার দরকার, আমরা সেটা করছি। অস্ত্রধারীদের ভিডিও ফুটেজ দেখে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা আপনাদের অ্যাসিওরেন্স দিতে পারি যে, আমরা কাউকে ছাড়ব না। যেই আইন ভঙ্গ করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবশ্যই হবে।”

সংঘর্ষের পর আইভী তার উপর হামলার জন্য শামীম ওসমানকে দায়ী করেন। শামীম সমর্থকদের মাঝে অস্ত্র হাতে উপস্থিত নিয়াজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার না করায় সমালোচনাও করেন তিনি।

অন্যদিকে শামীম ওসমান দাবি করেছেন, আইভী সমর্থকদের হামলার মুখে আত্মরক্ষায় নিজের লাইসেন্স করা অস্ত্র বের করেছিলেন নিয়াজুল।

তিনি বলেন, “তাকে (নিয়াজুলকে) আইভীর প্রিয় বন্ধু সুফিয়ানসহ বিএনপির ক্যাডাররা ধরে তিন দফা মারধর করেছে। চতুর্থ দফায় সে আত্মরক্ষার্থে পিস্তল বের করেছে। কিন্তু কোনো গুলি ছোড়ে নাই। সরকার তাকে অস্ত্রের লাইসেন্স দিয়েছে তো আত্মরক্ষার্থে।”

সংঘর্ষের সময় অস্ত্র হাতে নিয়াজুল, যাকে নিয়ে চলছে আলোচনা

নিয়াজুলের পরিচয় তুলে ধরে শামীম বলেন, “নিয়াজুল আওয়ামী লীগের সাহসী নেতা নজরুল ইসলাম সুইটের ছোট ভাই। যে সুইট বিএনপি শাসন আমলে খালেদা জিয়াকে কালো পতাকা দেখিয়েছিল। সুইটকে জেলখানা থেকে বের করে এনে র‌্যাব দিয়ে রাস্তার উপর গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিয়াজুল ভাই হত্যার বিচার পায় নাই। তাদের পরিবারের কেউ রাজনীতিতে নাই। সে বিশাল মার্কেটের মালিক ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।”

শামীম পাল্টা অভিযোগ করেছেন, আইভী সমর্থক ঠিকাদার আবু সুফিয়ানই সেদিন অস্ত্র প্রদর্শন করেছিলেন।

এই সংঘর্ষ কী কারণে হল, কারা করলো- তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “জনপ্রতিনিধির সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলাপ করেছি। তাদেরকে বলেছি, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এগুলো পছন্দ করছেন না, এ ধরনের কর্মকাণ্ড যদি বন্ধ না করেন, তাহলে ব্যবস্থা নিতে হবে আমাদের।”

সেলিমা হায়াৎ আইভী ও শামীম ওসমানের বিরোধ মিটছেই না

ওই সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেন বুধবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতার ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে এই সংঘর্ষ বাঁধে বলে তিনি মনে করছেন।

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের এই দুই নেতার বিরোধ দীর্ঘদিনের। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া এই বিরোধ প্রকট হয় ২০১০ সালে মেয়র নির্বাচনে আইভীর কাছে শামীম ওসমানের হারের পর।