পাঁচ দিনের সফরে বাংলাদেশে আসা প্রণব বুধবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে যান। মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়ও ছিলেন তার সঙ্গে।
বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এসময় রাষ্ট্রপতির তিন ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, রাসেল আহমেদ তুহিন, রিয়াদ আহমেদ তুষার ও মেয়ে স্বর্ণা হামিদ উপস্থিত ছিলেন।
পরে বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল হলে বৈঠক করেন হামিদ ও প্রণব।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাষ্ট্রপতি ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানিয়েয়ে বলেন, ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।”
এসময় দুইজন মুক্তিযুদ্ধকালীন বিভিন্ন ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন বলেও জানান প্রেস সচিব।
প্রেস সচিব বলেন, “প্রণব মুখোপাধ্যায় বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি আশা করেন বাংলাদেশ অদূর ভবিষ্যতে আরও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার প্রথম সফর ছিল বাংলাদেশ এবং অবসরের পরও প্রথম সফর বাংলাদেশ।
ভারতের সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের আতিথেয়তার প্রশংসা করেন এবং মাস্টারদা সূর্যসেনের স্মৃতি সংরক্ষণের প্রশংসা করেন।
মঙ্গল ও বুধবার চট্টগ্রামে অবস্থান করে মাস্টারদা সূর্যসেনের পৈত্রিক বসতভিটা ছাড়াও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে তার এবং প্রীতিলতার স্মৃতিধন্য স্থান ঘুরে দেখেন প্রণব।
ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাঙালি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মেয়াদ শেষ হয় গত বছরের জুলাইয়ে। পাঁচ দিনের ব্যক্তিগত সফরে রোববার ঢাকা পৌঁছান তিনি।
সোমবার সকালে ধানমণ্ডিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন প্রণব। সেখানে তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিকালে আন্তর্জাতিক বাংলা সাহিত্য সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।
মঙ্গলবার তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে তাকে দেওয়া হয় সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান শেষে মাস্টারদা সূর্য সেনের জন্মভূমি রাউজানে যান প্রণব।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, ভারতের হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাও উপস্থিত ছিলেন।
পরে আবদুল হামিদ ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও তার মেয়েকে বঙ্গভবনে নৈশভোজে আপ্যায়ন করান। নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অংশ নেন।
এছাড়া কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমসহ মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য নৈশভোজে অংশ নেন।