এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত আগামী বাজেটেই: প্রধানমন্ত্রী

এমপিওভুক্তির দাবিতে বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আসছে বাজেটেই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2018, 12:38 PM
Updated : 17 Jan 2018, 12:46 PM

জাতীয় সংসদের বুধবারের অধিবেশনে এক সংসদ সদস্যের প্রশ্নের উত্তরে একথা জানান তিনি।

এমপিওভুক্তির দাবিতে ছয় দিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন চালিয়ে আসার পর বেসরকারি প্রাথমিকের শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে সম্প্রতি কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

এরপর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সাংবাদিকদের বলেন, কয়েকটি শর্তে ‘শিগগিরই’ নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিভুক্ত করা হবে।

সংসদে শেখ হাসিনা বলেন, একটি বিদ্যালয়ে কত শিক্ষার্থী আছে, মান কী, শিক্ষকদের মান কী, সব বিবেচনায় নিয়ে নীতিমালা গ্রহণ করেই সরকারিকরণ কিংবা এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

“সেজন্য আমরা কোন কোন স্কুল এমপিওভুক্ত, কোন কোন স্কুল সরকারিকরণ, সেটা একটা নীতিমালার ভিত্তিতে করছি। আমরা যখন বলেছি, নিশ্চয়ই সব কিছু বিবেচনা করে একটা তালিকা করে এগুলোর অবস্থান দেখে পরবর্তী বাজেট যখন আসবে তখন সিদ্ধান্ত নেব।”

সবশেষ ২০১০ সালে এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করে সরকার। এরপর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি বন্ধ আছে।

প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে অনশন ভাঙছেন শিক্ষকরা (ফাইল ছবি)

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শুধু এমপিওভুক্ত করা নয়, শিক্ষাকে মানসন্মত শিক্ষা যাতে হয় আমরা সেই উদ্যোগ নেব।

“আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি, এক-একজন এক একটা দাবি নিয়ে চলে আসছে। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি। তবে এটা করতে গেলে আমাদের বাজেটে কতটাকা আছে তা দেখতে হবে। কোন স্কুল এটা পাওয়ার যোগ্য কী না, ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কত?”

এসময়, নিজের শ্বশুরবাড়ির এলাকা থেকে এমপিও করার জন্য তদবিরের কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। 

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৬ আসন থেকেও নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা। পরে, ওই আসনের ইপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

শেখ হাসিনা স্পিকারকে উদ্দেশ করে বলেন, “মাননীয় স্পিকার এটা আপনার নির্বাচনী এলাকার।”

শিরীন শারমিন হাসতে হাসতে জবাব দেন, “আপনার শ্বশুরবাড়ি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।”

শেখ হাসিনা এরপর বলেন, “আমার কাছে একজন এলো, মাত্র দেড়শ ছাত্রছাত্রী। সেটা সরকারিকরণ করার প্রস্তাব নিয়ে আসছে। আমার আত্মীয়।

“আমি বলে দিয়েছি, যেখানে মাত্র দেড়শ ছাত্র-ছাত্রী এটাকে কী করে সরকারিকরণ করব? আত্মীয় হলেই বা আমি ওখানে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলাম বলেই করতে পারব না।”

এমপিওভুক্তির দাবির পেছনে যৌক্তিকতা থাকার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।

“আমার আত্মীয় বলেই আমার কাছে একটা প্রস্তাব নিয়ে এলো আর আমি তা দেখেই সরকারি করে দেব? এত বড় অন্যায় তো আমি করব না।

ছবি: পিআইডি

“মনে রাখতে হবে বাজেটের টাকা জনগণের টাকা। এই জনগণের টাকা হেলাফেলা করে ফেলে দেওয়ার নয়। এটাকে যথাযথ ভাবে জনগণের কল্যাণে কাজ হয় সেটাই আমরা চাই”

আগামীতে সরকার কারিগরি শিক্ষার উপর জোর দেবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

“প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউ ও একটি করে মহিলা কারিগরী স্কুল প্রতিষ্ঠা আমরা করব।”