স্কুল ভবন তৈরি ও আসবাবপত্র জোগানে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা

বেসরকারি ৩ হাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ এবং ৩ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র জোগান দিতে ১০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা ব্যয় করবে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2018, 05:24 PM
Updated : 16 Jan 2018, 05:24 PM

সারাদেশ থেকে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাছাই করে তার উন্নয়নে ‘নির্বাচিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহের উন্নয়ন’ শীর্ষক এই প্রকল্প মঙ্গলবার একনেকে অনুমোদন পেয়েছে।

শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে এটিসহ প্রায় ১৮ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ের ১৪টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, এসব প্রকল্পে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ১৬ হাজার ৩৭১ কোটি টাকার জোগান দেওয়া হবে। প্রকল্প সহায়তা থেকে আসবে ২ হাজার ১৭ কোটি টাকা, বাকি ৯৫ কোটি টাকা সংস্থাগুলোর নিজস্ব খাত থেকে আসবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।

এই প্রকল্পটি নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে মুস্তফা কামাল বলেন, সার্বজনীন বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে মাধ্যমিক স্তরে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা গত কয়েক দশকে ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সেজন্য মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কক্ষের সংখ্যা বাড়ানো দরকার।

বর্তমানে দেশে ৩২৭টি সরকারি ও ১৯ হাজার ৩৫৭টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের ৩ হাজারটি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ভবন নির্মাণ করা হবে।

এবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের অনশন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “শিক্ষকদের অনেক দেওয়া হয়েছে এবং দিচ্ছে। তারা চাইলেই সবকিছু সহজভাবে পেয়ে যাচ্ছে। আমি হলে এত সহজে দিতাম না। সরকারি চাকরীজীবীদের বেতন দ্বিগুণ করা হয়েছে, তাতেও তাদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না।”

তিনি আরও বলেন, “তারা তো এখন কোনো কাঠামোর মধ্যেই নেই। আস্তে আস্তে আমরা সবাইকে একটা কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসব। তাদেরকে এমপিওভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।”

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো

>>বন্যা প্রবণ ও নদী ভাঙন এলাকায় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ (তৃতীয় পর্যায়)’ প্রকল্প। এর ব্যয় ১ হাজার ৬৭০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

>>জেলা ত্রাণ গুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র নির্মাণ’ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ১২৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

>>চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায় মহানন্দা নদী ড্রেজিং ও রাবার ড্যাম’ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।

>>বৃহত্তর চট্টগ্রাম গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩’। এর ব্যয় ১  হাজার ২৯০ কোটি টাকা।

>>বৃহত্তর ফরিদপুরের চরাঞ্চল এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন ও দুগ্ধের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিতকরণ কারখানা স্থাপন’। এতে ব্যয় হবে  ৩৪৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা।

>>অগ্রাধিকারমূলক গ্রামীণ পানি সরবারাহ প্রকল্প’। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৭৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

>>নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

>>বরুড়া উপজেলার সাথে সংযুক্ত চাপাপুর-বরুড়া, নিমসার-বরুড়া এবং খাজুরিয়া-বরুড়া জেলা মহাসড়ক তিনটি যথাযথ মানে ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরন প্রকল্প’। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

>>৭টি র‌্যাব কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প (২য় সংশোধিত)’। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯৯ কোটি ৮ লাখ টাকা।

>>কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বহুতল অফিস ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প। এর ব্যয় ১১২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা

>>এ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) শিল্প পার্ক’ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ৩৮১ কোটি টাকা।

>>ঘূর্ণিঝড় পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসন প্রকল্প (ইসিআরআরপি) এলজিইডি অংশ’। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা।

>>এমারজেন্সি ২০০৭ ঘূর্ণিঝড় পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসন এবং প্রজেক্ট করডিনেশন এন্ড মনিটরিং ইউনিট প্রকল্প (তৃতীয় সংশোধিত)’ এতে ৬৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।