জামিন হয়নি আসাদ নূরের, হাই কোর্টে যাওয়ার পরামর্শ

জামিন আবেদন নিয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন তথ্য-প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার আসাদুজ্জামান নূর।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2018, 02:07 PM
Updated : 16 Jan 2018, 02:42 PM

মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাইফুল ইসলাম জামিন আবেদন নাকচ করে তার আইনজীবীদের উচ্চ আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। 

ফেইসবুকে ধর্ম নিয়ে ‘অশ্লীল ও মানহানিকর তথ্য প্রকাশের’ অভিযোগে তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় গত ২৫ ডিসেম্বর নূরকে (২২) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বরগুনার আমতলী থানায় দায়ের করা মামলায় নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে। পরদিন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠান।

তবে হাকিম আদালত থেকে মামলার নথিপত্র সাইবার ট্রাইব্যুনালে না পৌঁছানোয় জামিন আবেদন করতে পারছিলেন না আসাদাজ্জামান নূর।

এ বিষয়ে গত ২ জানুয়ারি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে খবর প্রকাশ হলে পরদিন নথিপত্র ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। এরপর ৪ জানুয়ারি ব্লগার নূর জামিন করলে বিচারক ১৬ জানুয়ারি শুনানির দিন রেখেছিলেন।

মঙ্গলবার ব্লগার আসাদুজ্জামান নূরের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী পারভেজ হাশেম এবং জীবনানন্দ চন্দ জয়ন্ত।

পারভেজ হাশেম শুনানিতে বলেন, মামলার তদন্তে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফরেনসিক প্রতিবেদনে কথিত পোস্ট নিয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেন। তারপরও মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে ।

তিনি আরো বলেন, অভিযোগপত্রেও কার ফোইসবুক আইডি থেকে কার ফেইসবুকে অবমাননাকর তথ্য পাঠানো হয়েছে তা সুনিদিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া ইউটিউবে যে তথ্য আপলোড করা হয়েছে তাও স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট নয়।

শুনানি নিয়ে বিচারক আইনজীবীদের জামিন বিষয়ে হাই কোর্টে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে জামিন দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

বরগুনার আমতলী উপজেলার ইসলামিক আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মুফতী ওমর ফারুক গত বছর ৯ জানুয়ারি জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে লিমন ফকির (২৪) ও আসাদুজ্জামান নূরকে আসামি করে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭  ধারায় এই মামলা দায়েরের আবেদন জানান।

বড়গুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বৈজয়ন্ত বিশ্বাস বিষয়টি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে আমতলী থানা কতৃর্পক্ষকে নির্দেশ দেন।

পুলিশ ওই আরজি এজাহার হিসাবে গ্রহণ করে নথিপত্র বরগুনার আদালতে পাঠিয়ে দেয়।

লিমন ফকিরকে গত বছরের ১৮ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয়। রিমান্ডে জিজ্ঞসাবাদের পর তিনি গতবছরের ২ মে বরগুনায় একজন হাকিমের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

পরে গত ১২ অগাস্ট তাদের দুইজনের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় অভিযোগপত্র দেন আমতলী থানার ওসি মো. সহিদউল্যাহ।

এরপর মামলাটির নথি সাইবার ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশ-এ বিচারের জন্য আনা হয়।

পলাতক আসামি আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে গত ২৯ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক।