ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় ‘আপাতত’ বাধা নেই

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি পেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2018, 06:58 AM
Updated : 16 Jan 2018, 10:05 AM

আর ওই আপিলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাই কোর্টের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলে আপিল বিভাগ জানিয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।

এর ফলে আপাতত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় কোনো আইনি বাধা থাকছে না বলে এ মামলার আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

আপিল বিভাগে সরকারের দুটি দপ্তরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম ও আবদুল মতিন খসরু। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। আর রিটকারী পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম।

পরে মুরাদ রেজা পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের তিনটি লিভ টু আপিল ছিল। সেগুলো মঞ্জুর করে আপিল বিভাগ তিন সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সার সংক্ষেপ জমা দিতে বলেছে।

এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়ে ওষুধ প্রশাসন আলাদা একটি আপিল করেছিল। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি একসঙ্গে সবগুলো বিষয়ের আপিল শুনানি শুরু হবে।

আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাই কোর্টর রায় স্থগিত থাকবে বলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় আপাতত কোনো বাধা থাকছে না বলে রাষ্ট্রের এই আইন কর্মকর্তা জানান।

তিনটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ ও ২০১২ সালে জারি করা রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে গত ১১ মে ওই রায় দেয় বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাই কোর্ট বেঞ্চ।

২০০৯ সালের ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের ১১টি ধারা-উপধারা অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে হাই কোর্টের ওই রায়ে বলা হয়, এ আইন বিচার বিভাগের স্বাধীনতারও পরিপন্থি।

ফাইল ছবি

‘সমাজে বিপর্যয় নেমে আসবে’

আপিল বিভাগের আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম নিজের কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। 

রাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত বন্ধ হলে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।

“বড় যুক্তি হচ্ছে, মোবাইল কোর্ট জনহীতকর কাজে ব্যবহার হচ্ছে। মোবাইল কোর্ট না থাকলে মাদক বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না, অবৈধভাবে মৎস্য আহরণ বন্ধ করা সম্ভব না, কিশোরী বা যুবতি মেয়েদের রাস্তায় হাঁটাচলা এবং ইভটিজিং থেকে রক্ষা করা সম্ভব না। বাল্যবিবাহ থেকে মেয়েদের রক্ষা করা সম্ভব না। এ আইন আছে বলে ভেজালবিরোধী কার্যক্রম গ্রহণ করা গেছে। অবৈধ নির্মাণ, জুয়া, ইভটিজিং বন্ধ করা গেছে।

“কাজেই মোবাইল কোর্ট জেল দিতে পারবে না- এমন অজুহাতে মোবইল কোর্ট বন্ধ করে দেওয়া হলে সমাজে আরও বিপর্যয় নেমে আসবে। বিশৃঙখলার সৃষ্টি হবে।”

আপিল নিষ্পত্তি না হওয়ায় পর্যন্ত মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম চলবে বলেও জানান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।