রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড়ে যান চলাচল বন্ধ করে তাদের বিক্ষোভে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর, শাহবাগ, শহীদ মিনার ও ভিসি চত্বর পর্যন্ত যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় একই দাবিতে ঢাকা বিশ্ববদ্যিালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ব্যানারে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন হয়। ওই কর্মসূচি শেষে বেলা ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে সড়ক অবরোধে যান তারা।
‘বোঝামুক্ত ঢাবি চাই, সাত কলেজ বাতিল চাই’ শ্লোগান দিতে শোনা যায় শিক্ষার্থীদের।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজকে গত বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত করে সরকার। তখন থেকে এসব কলেজে ভর্তি পরীক্ষা, পাঠ্যসূচি ও পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিচালিত হচ্ছে।
তবে অধিভুক্ত হওয়ার পর পরীক্ষায় বসতে বিক্ষোভ করতে হয়েছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের। গত বছর জুলাইয়ে শাহবাগে শিক্ষার্থীদের সমাবেশে পুলিশের ছোড়া কাঁদুনে গ্যাসের শেলে দুই চোখের দৃষ্টি হারান তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান।
ঢাকার সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিউটিড অব ইনফরমেশন টোকনোলজির ছাত্র মশিউর রহমান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাত কলেজ বাতিলের দাবিতে উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি দিয়েছি, অধিভুক্তি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, এই অধিভুক্তির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নানামুখী সমস্যা ও বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ছে।
“সাত কলেজের শিক্ষার্থীরাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিচ্ছে। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দুই লক্ষ শিক্ষার্থীর মৌখিক পরীক্ষা, সিলেবাস, প্রশ্নপত্রসহ নানা ধরনের কাজ করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়ানোর সময় পান না। শিক্ষকরা চায় না সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত থাক।
“এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে গেলে কর্মকর্তারা বলেন, আপনি কোন কলেজের? আর সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের কাজের চাপ সামলাতেও হিমশিম খাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষার্থীদের বলেছি, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যই।
“সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস তাদের কলেজ, তাদের ভারাক্রান্ত বোধ করার কোনো কারণ নেই।তাদের লেখাপড়া পরিচালিত হবে তাদের ক্যাম্পাসে।”