আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে রোববার বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে।
শ্রীপুর উপজেলার চরমহিষপুর গ্রামের মো. জিল্লুর রহমান, মো. ইউসুফ জোয়ার্দ্দার ও মো. আক্কাস শেখকে ২০১১ সালে এ মামলায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। হাই কোর্টে সেই সাজা কমিয়ে তাদের যাবজ্জীবন দিয়েছে।
হাই কোর্টে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ বি এম নুরুল ইসলাম, আবদুল মতিন খসরু ও আহসান উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম আজাদ খান, সৈয়দা সাবিনা আহমেদ ও মারুফা আক্তার শিউলি।
রায়ের পরে মনিরুজ্জামান রুবেল বিডিনিউজ টোয়ন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আসামিদের বয়স বিবেচনায় নিয়ে আদালত তাদের যাবজ্জীবন দিয়েছে। মামলার অভিযোগপত্র যখন দেওয়া হয় তখন ইউসুফের বয়স ছিল ২৬, জিল্লুরের ও আক্কাসের ২৫ বছর।
হাই কোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানান রাষ্ট্রের এই আইন কর্মকর্তা।
মামলার নথিতে বলা হয়, শ্রীপুর উপজেলার চরমহিষপুর গ্রামের বাসিন্দা মনোজিত সমাদ্দারের মেয়ে পূর্ণিমা (১৪) ছিল চরমহিষপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
২০১০ সালের ৪ অগাস্ট পূর্ণিমা দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা দিয়ে বিকালে বাড়ি ফেরার পথে আসামিরা তাকে অপহরণ করে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। পরে মাথার স্কার্ফ দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে পূর্ণিমাকে হত্যা করে ক্ষেতের মধ্যে লাশ ফেলে রাখে।
পূর্ণিমার বাবা মনোজিত সমাদ্দার ওই দিনই অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তিনজনকে আসামি করে মাগুরার আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা।
পরে মামলাটি বিচারের জন্য খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যায়। ওই আদালতের বিচারক মো. সেকান্দার আলী তিন আসামির আসামিদের উপস্থিতিতে ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে অপহরণের অভিযোগে তিন আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে প্রত্যেককে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারক। রায় ঘোষণার পর তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় কারাগারে।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাই কোর্টে আপিল করেন। পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য হাই কোর্টে নথি আসে। সেই ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে রোববার হাই কোর্ট রায় দিল।