একই অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, যারা এই উন্নয়নের বিরোধী তারাই সরকারের বিরোধিতা করছে।
আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয় দফায় ক্ষমতারোহনে আশাবাদী দুই মন্ত্রী এই উন্নয়নযাত্রা ব্যাহত হতে না দেওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন।
সরকারের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘উন্নয়ন ও সাফল্যের চার বছর উদযাপন’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন।
দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি চর্চা ‘অব্যাহত রাখতে’ আগামী নির্বাচনে ‘মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির’ পক্ষে থাকতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান দুই মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশ দীর্ঘদিন উল্টো পথে হেঁটেছে, বাংলার ইতিহাসের ভুল পথে যাত্রা শুরু হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে চিত্রটি পাল্টে যায়। বাংলাদেশে স্বাধীনতার সুবাতাস বইতে শুরু করে, শুরু হয় উন্নয়নের মহাযজ্ঞ। আমরা এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় উজ্জ্বল আলোর অভিসারী হয়ে নতুন লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছি।”
আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “আমাদের উন্নয়নের পথটি কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। গণবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধীরা আন্দোলনের নামে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করা করেছে। ধর্মের নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করে, ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গিবাদের জন্ম দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তাদের প্রশ্রয় দেয়নি।”
তিনি বলেন. “উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে তা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের কোটি কোটি মানুষের কাছে আমরা পৌঁছে দিতে চাই। গণতন্ত্রের অভিযাত্রা আমরা কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দেব না।”
‘পিতার স্বপ্নে কন্যার আহবানে কোটি মানুষের মিছিল চলেছে মুক্তির অভিযানে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এই আনন্দ-আয়োজনে জনপ্রিয় শিল্পীদের পরিবেশনার পাশাপাশি নৃত্য-গীত-বাদ্যযন্ত্রে তুলে ধরা হয় বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের নানা ধারা, সরকারের নানা উন্নয়ন প্রকল্প।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা। তাদের পরিবেশনায় ছিল সমবেত নৃত্য, অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী, সম্মিলিত যন্ত্রসংগীত পরিবেশনা।
তাদের পর মঞ্চে আসে ব্যান্ড দল দলছুট। তারা একে একে গেয়ে শোনায় ‘বৃষ্টি’, ‘ভাঙা গড়ার খেলা’, ‘পরী’, ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’, ‘দিন বাড়ি যায়’, ‘বাজি’, ‘চাঁদের শহরে’, শাহ্ আবদুল করিমের ‘গাড়ি চলে না চলে না রে’সহ নিজেদের জনপ্রিয় গানগুলো।
অনুষ্ঠানের ফাঁকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নানামুখী কর্মকাণ্ড নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
তিনি বলেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ও যুক্তরাষ্ট্রে এর আগে সরকারি উদ্যোগে শিল্পী বিনিময় কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়নি। সাম্প্রতিক সময়ে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অচলাবস্থা কাটতে শুরু করেছে।
নূর বলেন, “বিশ্বের নানা দেশে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছিল, তা আমরা দূর করতে চাই। দূতাবাসগুলোর পাশাপাশি জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের সহযোগিতায় আমরা বাংলাদেশের একটি সম্মানজনক অবস্থান তুলে ধরছি। অনেক ভুল ধারণা ছিল, এগুলো কাটতে শুরু করেছে।”
নগরকেন্দ্রিক সংস্কৃতি চর্চাকে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে উপজেলাগুলোতে শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা, গণগ্রন্থাগারের সংখ্যা বাড়ানোর মতো কার্যক্রম নেওয়ার কথা জানান তিনি।
“আমাদের মূল লক্ষ্য- সংস্কৃতির চেতনায় এক মানবিক মূল্যবোধের বাংলাদেশ নির্মাণ,” বলেন নূর।