ঢাকা-গাজীপুর ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচলকারী সব বাস সকাল থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকায় যাত্রীদের অনেককে বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হতে দেখা যায়।
দুই গ্রুপে বিভক্ত তাবলিগ জামাতের একটি অংশ জামাতের কেন্দ্রীয় এক শুরা সদস্যের বাংলাদেশে আসার প্রতিবাদে সকাল ৯টার দিকে বিমানবন্দর এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করলে যানজট শুরু হয় বলে জানান বিমানবন্দর থানার ওসি নূর এ আজম।
দিনব্যাপী এই যানজটের কারণে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন উত্তরার অধিবাসীরা। এই আবাসিক এলাকার প্রতিটি সেক্টরের প্রত্যেক রাস্তায় যানজটের প্রভাব পড়ে।
উত্তরার কেউ কেউ গাড়ি নিয়ে বাইরে বের হয়ে বাসার সামনেই যানজটে ঘণ্টাব্যাপী স্থবির হয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত বাসায় ফিরতে বাধ্য হন।
উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক লায়লা আজিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার এক নিকট আত্মীয়কে ডাক্তার দেখানোর জন্য দুপুর ১২টায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল। জ্যামের কারণে মিস হল।”
“কিন্তু আজকে যে পরিস্থিতি… আমাকে দুই হাতে দুই বাজারের ব্যাগ নিয়ে আড়াই কিলোমিটার পথ হেঁটে বাসায় ফিরতে হয়েছে।”
উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরে বসবাস করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফজলুর রহমান।
বেলা আড়াইটার দিকে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত দুই ঘণ্টা ধরে রাজলক্ষ্মীর উল্টোদিকের সড়কে যানজটে আটকে আছি।”
অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে বেড়াতে এসে উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের বোনের বাসায় থাকছেন শায়লা মোনায়েম। মেয়েকে নিয়ে বের হয়েছিলেন গুলশানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে, কিন্তু বাসার গেইটের সামনেই ৪০ মিনিট গাড়িতে বসে থাকতে হয় তাদের। পরে বিকল্প পথে আশুলিয়া দিয়ে বেড়িবাঁধ হয়ে মিরপুর ও শ্যামলী পার হয়ে গুলশান পৌঁছান তারা।
ভারতীয় উপমহাদেশের সুন্নি মতাবলম্বী মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় সংঘ তাবলিগ জামাতের মূল কেন্দ্র বা মারকাজ দিল্লিতে। কেন্দ্রীয় ওই পর্ষদকে বলা হয় নেজামউদ্দিন, যার ১৩ জন শুরা সদস্যের মাধ্যমেই উপমহাদেশে তাবলিগ জামাত পরিচালিত হয়।
ইজতেমায় অংশ নিতে বুধবার তার ঢাকা আসার খবরে সকাল থেকেই বিমানবন্দরের বাইরে বিক্ষোভ শুরু হয়। এরমধ্যেই বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভি ঢাকায় পৌঁছান। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকায় তাবলিগের কার্যক্রমের মূল কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদে যান তিনি।