২০১৭: যাদের হারিয়েছে দেশ

রাজনীতি, চলচ্চিত্র, শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেককে এ বছর হারিয়েছে বাংলাদেশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2017, 03:15 AM
Updated : 31 Dec 2017, 02:15 PM

বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য সামনের দিনেও যাদের স্মরণ করবে বাংলাদেশ- এমন কয়েকজনের কথা তুলে ধরা হল বছরের শুরু থেকে শেষের ক্রমে।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে রোববার তার মরদেহ ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আনা হয়।

 

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত

দেশের প্রায় সব সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা ও সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত  মারা যান ৫ ফেব্রুয়ারি

তিনি সাতবার জাতীয় সংসদে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। মৃত্যুর সময় ছিলেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি।

২০১১ সালে নবগঠিত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর মন্ত্রিসভায় স্থান হয়। সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির দায় মাথায় নিয়ে তিনি পদত্যাগ করলেও দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসাবে রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত সুরঞ্জিত ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ের নির্বাচনে ন্যাপ থেকে জয়ী হয়ে আলোচনার জন্ম দেন। একাত্তরে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন ৫ নম্বর সেক্টরের সাব কমান্ডার হিসেবে। ১৯৭৯ সালের সংসদে ছিলেন একতা পার্টির প্রতিনিধি হয়ে। ১৯৯১ সালের সংসদে গণতন্ত্রী পার্টি থেকে নির্বাচিত হন তিনি।

তিনি ছিলেন নবম সংসদে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধন কমিটির কো-চেয়ারম্যান। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব দিয়েছিলেন।

১৯৩৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার আনোয়ারাপুরে জন্মেছিলেন এই রাজনীতিবিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর করে ঢাকা সেন্ট্রাল ল কলেজ থেকে আইনে ডিগ্রি নেন সুরঞ্জিত। পরে কিছুদিন আইন পেশায় যুক্ত ছিলেন তিনি।

‘শেষ ট্রেনের যাত্রী’ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত

মিজু আহমেদ

জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা মিজু আহমেদ মারা যান গত ২৭ মার্চ, ৬৪ বছর বয়সে।

১৯৯২ সালে সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত মিজু আহমেদ শৈশবকাল থেকে থিয়েটারের প্রতি আগ্রহী ছিলেন।

১৯৭৮ সালে ‘তৃষ্ণা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে বড়পর্দায় আত্মপ্রকাশের পর খুব অল্পসময়ের মধ্যেই নিজেকে ঢালিউডের অন্যতম সেরা একজন খলনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন তিনি।

তার অভিনীত ছবিগুলো হল- তৃষ্ণা (১৯৭৮), মহানগর (১৯৮১), সারেন্ডার (১৯৮৭), চাকর (১৯৯২), সোলেমান ডাঙ্গা (১৯৯২), ত্যাগ (১৯৯৩), বশিরা (১৯৯৬), আজকের সন্ত্রাসী (১৯৯৬), হাঙ্গর নদী গ্রেনেড (১৯৯৭), কুলি (১৯৯৭), লাঠি (১৯৯৯), লাল বাদশা (১৯৯৯), গুন্ডা নাম্বার ওয়ান (২০০০), ঝড় (২০০০), কষ্ট (২০০০), ওদের ধর (২০০২), ইতিহাস (২০০২), ভাইয়া (২০০২), হিংসা প্রতিহিংসা (২০০৩), বিগ বস (২০০৩), আজকের সমাজ (২০০৪), মহিলা হোস্টেল (২০০৪), ভণ্ড ওঝা (২০০৬) ইত্যাদি।

অভিনয় ছাড়া নিজের চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা ফ্রেন্ডস মুভিজের ব্যানারে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রও প্রযোজনা করেন তিনি।

না ফেরার দেশে মিজু আহমেদ

লাকী আখান্দ

আশির দশকের শুরুতে লাকী ও হ্যাপী আখান্দ জুটির বেশ কিছু গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৮৪ সালে বাজারে আসে লাকীর প্রথম একক অ্যালবাম, যার গান শ্রোতাদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে।

‘এই নীল মণিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘আগে যদি জানতাম’-এর মত জনপ্রিয় গান উপহার দিয়ে গেছেন তিনি।

১৯৮৭ সালে হ্যাপীর মৃত্যুর পরপর সঙ্গীতাঙ্গন থেকে অনেকটাই স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান এই গুণী শিল্পী।

‘যেখানে সীমান্ত তোমার’, ‘কী করে বললে তুমি’, ‘লিখতে পারি না কোনো গান আজ তুমি ছাড়া’, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’, ‘কে বাঁশি বাজায়রে’, ‘স্বাধীনতা তোমাকে নিয়ে’, ‘নীল নীল শাড়ি পড়ে’, ‘পাহাড়ি ঝর্ণা’, ‘হঠাৎ করে বাংলাদেশ’সহ বহু গানে মিশে আছে লাকী আখান্দের নাম।

লাকী আখান্দ: নতুন দেশের তারুণ্যের সুর

জিয়াউদ্দিন আহমেদ

একাত্তরে সুন্দরব্ন অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়া অবসরপ্রাপ্ত মেজর জিয়াউদ্দিন আহমেদ ২৮ জুলাই সিঙ্গাপুরে মারা যান

লিভার সিরোসিসে ভুগে ৬৭ বছর বয়সে মারা যাওয়া এই মুক্তিযোদ্ধা ১৯৬৯ সালে সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। পরে মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরে মেজর এম এ জলিলের অধীনে সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন।

কর্নেল তাহেরের অনুসারী এক সময়ের এই সেনা কর্মকর্তা ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পর সুন্দরবনে আশ্রয় নেন। পরে সুন্দরবনে সেনা অভিযানে গ্রেপ্তার হন তিনি। সামরিক আদালতে বিচারের নামে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসিতে ঝোলানোর পাশাপাশি জিয়াউদ্দিনকেও ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ১৯৮০ সালে রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি পান তিনি।

আশির দশকে এইচ এম এরশাদ সরকারের সময় বেশ কিছুদিন সিঙ্গাপুরে ছিলেন এই মুক্তিযোদ্ধা। পরে দেশে নিজের এলাকায় ফিরে শুরু করেন শুঁটকির ব্যবসা। ১৯৮৯ সালে তিনি পিরোজপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

একাত্তরে সুন্দরবন অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত রাখতে নেতৃত্ব দেওয়া এই মুক্তিযোদ্ধা পরে ‘সুন্দরবন বাঁচাও’ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন তোলেন। স্থানীয়ভাবে তাকে ডাকা হতো সুন্দরবনের ‘মুকুটহীন সম্রাট’ নামে।

মুক্তিযুদ্ধকালীন সুন্দরবনের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে তিনি ‌‘সুন্দরবন সমরে ও সুষমায়’ নামে একটি বইও লিখেছেন।

মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউদ্দিনকে শেষ শ্রদ্ধা

নায়করাজ রাজ্জাক

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক মারা যান ২১ অগাস্ট

৭৫ বছর বয়সে মৃত্যুর আগে পাঁচশর বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। তিনি বাংলাদেশের মানুষের কাছে নায়করাজ নামেই খ্যাত ছিলেন।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সাদা কালো যুগ থেকে শুরু করে রঙিন যুগ পর্যন্ত দাপটের সাথে অভিনয় করে গেছেন তিনি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে ২৫ বছর প্রায় একাই টেনেছেন এই চিত্রনায়ক।

বাংলা চলচ্চিত্রকে দিয়েছেন ‘রংবাজ’, ‘আনোয়ারা’, ‘সুয়োরাণী-দুয়োরাণী’, ‘দুই ভাই’, ‘মনের মতো বউ’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘ময়নামতি’, ‘ক খ গ ঘ ঙ’, ‘বেঈমানের’ মতো চলচ্চিত্র।

বদনাম, সৎ ভাই, চাপা ডাঙ্গার বউসহ প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন রাজ্জাক। তার মালিকানার রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন থেকেও নির্মিত হয় বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র।

অভিনয়ের জন্য রাজ্জাক পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় পুরস্কারসহ অনেক সম্মাননা। ২০১৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আসরে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় তাকে। ২০১৫ সালে তিনি পান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার।

অভিনয় জীবনের বাইরে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করেন রাজ্জাক।

রাজ্জাক: বাঙালি তারুণ্যের মানচিত্র

আবদুল জব্বার

‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘ওরে নীল দরিয়া’র মতো অনেক গানের জনপ্রিয় শিল্পী আবদুল জব্বার চির বিদায় নেন ১০ অক্টোবর।

পাঁচ দশকের বেশি সময় বাংলাদেশের গানের ভূবনে আলো ছড়ানো দরাজ কণ্ঠের এই শিল্পীর দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পাশাপাশি তিনি হৃদযন্ত্র ও প্রোস্টেটের সমস্যায় ভুগছিলেন।

১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন আব্দুল জব্বার। মায়ের প্রেরণায় ছোটবেলা থেকেই সংগীতের সঙ্গে গড়ে ওঠে তার সখ্য। ১৯৫৭ সালে একটি বিচিত্রানুষ্ঠানে জব্বারের কণ্ঠে নজরুলের গান ‘ঘুমিয়ে আছো বুলবুলি গো মদিনার গুলবাগে’ শুনে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন গীতিকার আজিজুর রহমান। পরের বছর নিয়মিত শিল্পী হিসেবে বেতারে গাইতে শুরু করেন আবদুল জব্বার। সেখানেই নজরে পড়েন সংগীত পরিচালক রবীন ঘোষের।

স্বাধীনতার আগে জহির রায়হানের ‘সঙ্গম’, ‘জীবন থেকে নেওয়া’, সুভাষ দত্তের ‘আলিঙ্গন’, নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘দীপ নেভে নাই’, ‘ঢেউয়ের পরে ঢেউ’, ‘বিনিময়’, ‘নাচের পুতুল’, ‘ছদ্মবেশী’, ‘সিরাজুদ্দৌলা’, ‘আপনপর’, ‘এতটুকু আশা’র মতো সিনেমায় গান গেয়ে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

এর মধ্যে ‘এতটুকু আশা’ সিনেমায় আবদুল জব্বারের কণ্ঠের ‘তুমি কি দেখেছো কভু’; পীচ ঢালা পথ সিনেমার ‘পীচঢালা এই পথটারে ভালোবেসেছি’; ঢেউয়ের পরে ঢেউ সিনেমায় ‘সুচরিতা যেওনাকো’ গানগুলো মানুষের মুখে মুখে ফিরেছে দীর্ঘদিন।

ষাটের দশকের শেষ দিকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় পূর্ব পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবীরা গ্রেপ্তার হওয়ার সময় থেকে প্রতিবাদী গণসংগীতে কণ্ঠ দিতে শুরু করেন আব্দুল জব্বার। ‘তুমি কি দেখেছো বন্ধু আইয়ুবের পরাজয়’, ‘শহরবাসী শোন’, ‘তোমরা যাদের মানুষ বলনা’র মতো গানগুলো গাইতে গাইতেই স্বাধীনতার আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।

১৯৬৯ সালে ‘বিমূর্ত’ নামের একটি সংগীত বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন আবদুল জব্বার; গঠন করেন ‘বঙ্গবন্ধু শিল্পীগোষ্ঠী’, যার সভানেত্রী ছিলেন বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজীব।

একাত্তরের ২৫ মার্চের পর স্ত্রীকে নিয়ে আগরতলায় চলে যান আব্দুল জব্বার, সেখানে দেখা হয় আপেল মাহমুদের সঙ্গে। পরে তারা মুজীবনগরে পৌঁছে যোগ দেন স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রে।

মুক্তিযুদ্ধের নয়টি মাস ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’, ‘অনেক রক্ত দিয়েছি মোরা’, ‘আমি এক বাংলার মুক্তিসেনা’, ‘বাংলার স্বাধীনতা আনলো কে- মুজিব মুজিব’ গানগুলো স্বাধীনতাকামী বাঙালিকে নতুন সূর্যের জন্য অপেক্ষার প্রেরণা যুগিয়ে গেছে।

সংগীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৮০ সালে আবদুল জব্বারকে একুশে পদক এবং ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। ২০০৬ সালে বিবিসি বাংলার শ্রোতা জরিপে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় আসে তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ ও ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গান তিনটি।

দ্বিজেন শর্মা

‘নিসর্গসখা’ লেখক দ্বিজেন শর্মা ৮৮ বছর বয়সে মারা যান  ১৫ সেপ্টেম্বর।

বাবা কবিরাজ ছিল বলে ছোটবেলা থেকেই লতা-পাতা, বৃক্ষ আর অরণ্য-প্রকৃতির সাথে সখ্য গড়ে ওঠে তার। উদ্ভিদ জগত, প্রকৃতি বিজ্ঞান আর বিজ্ঞান ভাবনা নিয়ে লিখে গেছেন দেড় ডজন বই।

উদ্ভিদ ও প্রকৃতি নিয়ে তার লেখা ‘শ্যামলী নিসর্গ’কে বিবেচনা করা হয় আকরগ্রন্থ হিসেবে।

তার অন্যান্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে- ‘সপুষ্পক উদ্ভিদের শ্রেণীবিন্যাস’, ‘ফুলগুলি যেন কথা’, ‘গাছের কথা ফুলের কথা’, ‘এমি নামের দুরন্ত মেয়েটি’, ‘নিসর্গ নির্মাণ ও নান্দনিক ভাবনা’, ‘সমাজতন্ত্রে বসবাস’, ‘জীবনের শেষ নেই’, ‘বিজ্ঞান ও শিক্ষা: দায়বদ্ধতার নিরিখ’, ‘জীবনের শেষ নেই’, ‘ডারউইন ও প্রজাতির উৎপত্তি’, ‘বাংলার বৃক্ষ’, ‘বিগল যাত্রীর ভ্রমণকথা’, ‘গহন কোন বনের ধারে’।

ফাইল ছবি

 
জসিম উদ্দিন মণ্ডল

সুবক্তা হিসেবে পরিচিত এই কমিউনিস্ট নেতা ৯৫ বছর বয়সে ২ অক্টোবর মারা যান

রেল শ্রমিক থেকে কমিউনিস্ট আন্দোলনে যুক্ত হওয়া জসীম মণ্ডল ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি- সিপিবির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েছিলেন। ২০১২ সাল থেকে আমৃত্যু দলটির উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

জসিম মণ্ডল বাংলাদেশ রেল শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহসভাপতি ছিলেন। ছিলেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রেরও উপদেষ্টা।

শোক বার্তায় সিপিবি বলে, “আজীবন বিপ্লবী কমরেড জসিম উদ্দিন মণ্ডল তরুণদের স্বপ্নের নায়ক। তিনি হাজার হাজার তরুণকে কমিউনিস্ট আদর্শ ও আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করেছেন। সহজ-সরল-সাবলীল অথচ অনলবর্ষী বক্তৃতায় তিনি সহজেই জনতাকে আকৃষ্ট করতেন।”

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা জসিম উদ্দিন মণ্ডলের জন্ম ১৯২২ সালে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায়। ছেলেবেলাতেই ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি।

১৯৪০ সালে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন স্বশিক্ষিত জসীম মণ্ডল। দেশভাগের পর পাবনার ঈশ্বরদীতে চলে আসে তার পরিবার। সেখানে রেল শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি।রেল শ্রমিক ইউনিয়নে যুক্ত হওয়ার সুবাদে ভারতের কমিউনিস্ট নেতা জ্যোতি বসুর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ ঘটেছিল জসীম মণ্ডলের।

একাত্তরে ভারতে থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ভূমিকা রাখেন জসিম মণ্ডল। জসিম মণ্ডলকে জীবনের ১৭ বছর কারাগারেই কাটাতে হয়েছিল।

এম কে আনোয়ার

সাবেক মন্ত্রী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার ৮৪ বছর বয়সে ২৩ অক্টোবর মারা যান

সাবেক আমলা এম কে আনোয়ারের পুরো নাম মোহাম্মদ খোরশেদ আনোয়ার। কুমিল্লার হোমনা আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

খালেদা জিয়ার বিএনপি সরকারে দুই দফা মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। ২০০১-২০০৬ মেয়াদে তিনি কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

পাকিস্তান আমলে সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর স্বাধীন বাংলাদেশেও প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন এম কে আনোয়ার। সরকারের অর্থ সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্বও তিনি পালন করেন।

১৯৯০ সালে অবসরের পর এম কে আনোয়ার রাজনীতির মাঠে নামেন, যোগ দেন বিএনপিতে।

আবদুর রহমান বিশ্বাস

৯১ বছর বয়সে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস মারা যান ৩ নভেম্বর

নব্বইয়ের দশকে বিএনপি সরকারের সময়ে রাষ্ট্রপতি ছিলেন তিনি।

জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভার সদস্য আবদুর রহমান বিশ্বাসকে ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদের স্পিকারের দায়িত্ব দিয়েছিলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ওই বছর ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ষোড়শ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের কয়েক মাস পর তার দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হয়। এর পর থেকে তিনি অনেকটা অন্তরালেই ছিলেন।

বাংলাপিডিয়া লিখেছে, মুক্তিযুদ্ধকালে আবদুর রহমান বিশ্বাসের আনুগত্য ছিল পাকিস্তান সরকারের প্রতি।

আইয়ুব খানের শাসনামলে মুসলিম লীগে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে আবদুর রহমান বিশ্বাস রাজনীতিতে আসেন। ১৯৬২ ও ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হন তিনি।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জিয়াউর রহমানের সময়ে ১৯৭৭ সালে বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান হন আবদুর রহমান বিশ্বাস। ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে বরিশাল থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে আসেন জাতীয় সংসদে।

আ ফ ম মাহবুবুল হক

একাত্তরের যোদ্ধা বাম নেতা আ ফ ম মাহবুবুল হক মারা যান ১০ নভেম্বর, ৬৯ বছর বয়সে।

মৃত্যুর সময়ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মাহবুব) আহ্বায়ক ছিলেন মাহবুবুল হক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে পড়ার সময় ১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সূর্যসেন হল শাখার সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৬৯-৭০ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (মুজিব বাহিনী) গঠন করা হলে সেখানে প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন মাহবুবুল হক।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ছাত্রলীগ ভেঙে জাসদ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা পেলে মাহবুবুল হক হন প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৮ পর্যন্ত তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ সালে জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন।

বারী সিদ্দিকী

কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার, বাঁশিবাদক ছিলেন তিনি। এই শিল্পী মূলত লোকগান ও আধ্যাত্মিক ধারার গানের জন্য পরিচিত।

গত শতকের শেষ দিকে কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের হাত ধরে সারা দেশের শ্রোতাদের কাছে পৌঁছান তিনি। ১৯৯৯ সালে হুমায়ূন আহমেদের রচনা ও পরিচালনায় শ্রাবণ মেঘের দিন চলচ্চিত্রে সাতটি গানে কণ্ঠ দেন বারী সিদ্দিকী। ‘শুয়া চান পাখি’ গানটি সে সময় তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।

টেলিভিশনে ‘রঙের বাড়ই’ নামে একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’ গানটি প্রচার করা হলে বারী সিদ্দিকী পৌঁছে যান সারা দেশের শ্রোতাদের হৃদয়ে।

পরে রূপকথার গল্প, নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ ও আমার দেশের মাটিসহ আরও কয়েকটি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকে গেয়েছেন এই শিল্পী। তার কণ্ঠের গান নিয়ে ডজনখানেক অ্যালবামও প্রকাশিত হয়েছে।

আনিসুল হক

টিভি উপস্থাপক ও ব্যবসায়ী পরিচয়ে চেনামুখ হলেও আনিসুল হক রাজনীতিতে আসেন আকস্মিকভাবেই। কীভাবে তা হল- তা বর্ণনা করতে গিয়ে আনিসুল হক নিজেই একবার বলেছিলেন, শেখ হাসিনার ‘এক ফুঁয়ে আমি নেতা’।

২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়ে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র নির্বাচিত হওয়া আনিসুল হক সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে এফবিসিসিআইর সভাপতি ছিলেন।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিজিএমইএ, সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বিআইপিপিএর সভাপতিও ছিলেন আনিসুল।

আশি ও নব্বইয়ের দশকে টিভি উপস্থাপক হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আনিসুল হকের উপস্থাপনায় ‘আনন্দমেলা’ ও ‘অন্তরালে’ অনুষ্ঠান দুটি জনপ্রিয়তা পায়।

আনিসুল হক: টিভিমুখ থেকে মেয়রের চেয়ারে

এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী

প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী মারা যান ১৫ ডিসেম্বর

৭৪ বছরের জীবনে মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রামের মেয়র ছিলেন ১৬ বছর। একাত্তরের এই মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যু পর্যন্ত ছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি। পাঁচ দশকের রাজনৈতিক জীবনে অনেক অর্জন থাকলেও কখনও সংসদ সদস্য হতে পারেননি মহিউদ্দিন।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মহিউদ্দিন চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের শীর্ষ পদে ছিলেন। চট্টগ্রামে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, বন্দর রক্ষা আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনেও তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।

ছাত্র অবস্থায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া মহিউদ্দিন ১৯৬২ সালে এসএসসি, ১৯৬৫ সালে এইচএসসি এবং ১৯৬৭ সালে ডিগ্রি পাস করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ এবং পরে আইন কলেজে ভর্তি হলেও শেষ করেননি। জড়িয়ে পড়েন ছাত্র আন্দোলনে।

১৯৬৮ ও ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা মহিউদ্দিন একাত্তরে গঠন করেন ‘জয় বাংলা’ বাহিনী। গ্রেপ্তার হন পাকিস্তানি সেনাদের হাতে।

সম্মুখ সমরের যোদ্ধা মহিউদ্দিন পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর প্রতিশোধ নিতে মৌলভি সৈয়দের নেতৃত্বে গঠন করেন ‘মুজিব বাহিনী’।

গত ১৮ ডিসেম্বর নগরীর জামালখান আসকার দীঘির পাড়ে রীমা কমিউনিটি সেন্টারে জনপ্রিয় এই নেতার কুলখানির মেজবানে ভিড়ের মধ্যে পদদলিত হয়ে দশ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন ‘সকলের নেতা’

মুহাম্মদ ছায়েদুল হক (১৯৪২-২০১৭)

মুহাম্মদ ছায়েদুল হক

১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের সকালে মারা যান মৎস ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক।  

৭৫ বছর বয়সী এ নেতা আওয়ামী লীগ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে পাঁচ বার সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে শেখ হাসিনার সরকারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।

নিজের নির্বাচনী এলাকা নাসিরনগরে গত বছর হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রি নেওয়ার পর এলএলবি পাস করে আইন পেশায় যুক্ত হয়েছিলেন ছায়েদুল হক।

১৯৬৮ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয় হওয়ার পর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন ছায়েদুল।

গোলাম মোস্তফা আহমেদ

গোলাম মোস্তফা আহমেদ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা আহমেদ মারা যান ১৯ ডিসেম্বর

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সুন্দরগঞ্জের সাংসদ মনজুরুল ইসলাম লিটন খুন হওয়ার পর ওই আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাংসদ হন ৬৬ বছর বয়সী মোস্তফা।

প্রথমবারের মত সাংসদ হওয়া গোলাম মোস্তফা ছিলেন চণ্ডীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। গত ৩২ বছর ধরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

নাট্যকার বেগম মমতাজ

বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘সকাল সন্ধ্যা’ ও ‘শুকতারা’র নাট্যকার বেগম মমতাজ হোসেন গত ২৯ ডিসেম্বর মারা যান।

রোকেয়া পদকে ভূষিত বেগম মমতাজের বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। ঢাকার উদয়ন বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ছিলেন তিনি। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধেও তার ভূমিকা ছিল। 

বেগম মমতাজ প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা আলমগীর কবীরের বোন। প্রয়াত চিত্রশিল্পী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা খালিদ মাহমুদ মিঠুর মা তিনি। তার স্বামী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন মারা যান ১৯৮১ সালে।

আরও যারা চলে গেছেন

আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের বেশ কয়েকজন সাবেক সংসদ সদস্য এ বছর মারা গেছেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সাংসদ ও মন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ (যশোর-২), সাবেক সাংসদ অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এ এ মারুফ সাকলান (নীলফামারী-৪), সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ (ময়মনসিংহ-৭) এ বছর মারা যান।

আওয়ামী লীগের তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য এবং সাবেক সাংসদ ইসহাক মিঞা (চট্টগ্রাম-১০), প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য ও সাবেক সাংসদ মো. সাদত আলী সিকদার, মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের কোম্পানি কমান্ডার ও সাবেক সাংসদ শফিকুল ইসলাম খোকা (জামালপুর-৩), সাবেক সাংসদ খান টিপু সুলতান (যশোর-৫), সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ এস এম আবু সাঈদ (নড়াইল-১), সাবেক সাংসদ সরদার মোশারফ হোসেন (দিনাজপুর-৫) ও সাবেক সাংসদ মো. মর্তুজা হোসেন মোল্লা (কুমিল্লা-২) মারা যান।

বিএনপি নেতাদের মধ্যে থেকে সাবেক সাংসদ সাবেক মন্ত্রী হারুনার রশিদ খান মুন্নু (মানিকগঞ্জ-২ ও ৩), সাবেক সাংসদ ও  প্রতিমন্ত্রী নূরুল হুদা (চাঁদপুর-২), সাবেক সাংসদ কাজী মো. আনোয়ার হোসেন (ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া-৫), সাবেক সাংসদ ধীরেন্দ্র নাথ সাহা (নড়াইল-১), সাবেক সাংসদ কে এম আবদুল খালেক চন্টু (কুষ্টিয়া-৩), সাবেক সাংসদ এহসান আলী খান (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), সাবেক সাংসদ মো. মোজাম্মেল হক (চুয়াডাঙ্গা-২), সাবেক সাংসদ ডা. মো. ছানাউল্লা (ঢাকা-২২), সাবেক সাংসদ জয়নুল আবেদীন সরকার (লালমনিরহাট-১) এ বছর মারা যান।

আর জাতীয় পার্টি নেতাদের মধ্যে সাবেক সাংসদ জাফরুল হাসান ফরহাদ (বরগুনা সদর), সাবেক সাংসদ আহসান আহমদ (নীলফামারী-২), সাবেক সাংসদ মো. বদরুজ্জামান (কুষ্টিয়া-৩) ও সাবেক সাংসদ মোফাজ্জল হোসেন (রংপুর-৩) মারা যান।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল থেকে চতুর্থ জাতীয় সংসদের সাংসদ আবদুল মতিন মিয়া (টাঙ্গাইল-২) এ বছর মারা যান।